ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ

খালিদ ইবনে আমিন

প্রকাশিত: ২০:১৬, ১৭ জুন ২০২৫

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ

মহান মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সংগ্রামে লাখো জনতার জীবনের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষ একবুক আশায় বুকবাঁধে গণতন্ত্র উত্তরণের নতুন স্বপ্নে। জনগণের আশায় গুড়েবালি হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর এ অঞ্চলের মানুষদের বোঝানো হয়েছিল, পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন-শোষণমুক্ত হতে পারলে বাঙালির মুক্তি আসবে, বাঙালি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। দেশের আমজনতা মনে করেছিল, জনগণের গলা আর চেপে ধরবে না কেউ, গড়ে উঠবে মুক্তমত, মুক্তচিন্তা এবং বাকস্বাধীনতা। কিন্তু না, তা হয়নি, ৪৭-এ দেশভাগের পর বারবার এ অঞ্চলের মানুষ প্রতারিত হয়েছে বুর্জুয়া প্রতারক রাজনীতিবিদদের ধোঁকায়। জনগণ যেই তিমির সেই তিমিরেই থেকেছে যুগ যুগ ধরে।
একটি স্বাধীন দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে যেখানে গণমাধ্যম হবে সমাজের স্বাধীনতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, সেখানে কয়েক বছরের মাথায় সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। যেই শেখ মুজিবুর রহমানকে এ দেশের জনগণ রাজনৈতিক ইমাম মনে করেছিল,  তিনিই কিনা নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়ে জনগণের টুঁটি চেপে ধরতে এক মুহূর্তও কুণ্ঠা বোধ করলেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৫ সালের শেখ মুজিবের শাসনামলে গণমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা ও সেখান থেকে উদ্ভূত সংকট ছিল  দেশের রাজনীতির আকাশে এক ঘোর অমানিশা, যার চূড়ান্ত রূপ দেখতে দেশবাসীকে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। যার চূড়ান্ত ট্র্যাজেডি ৭৫-এর ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনা এবং শেখ মুজিবের নির্বংশ হওয়া। একজন মানুষের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা থেকে এভাবে পাতালপুরীর অতল গহ্বরে তলিয়ে যাওয়ার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তার শাসনামলে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ এবং সিকিউরিটি অবলম্বে নানা কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যা সদ্য স্বাধীন দেশে শিশু গণতন্ত্রের গালে চপেটাঘাতের শামিল।
স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরই ১৯৭২ সালের সংবিধানে বাক্স্বাধীনতার অঙ্গীকার থাকলেও তা অধিকাংশ সময়ই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে চাপে পড়ে। ১৯৭৩ সালে প্রিন্টিং প্রেস ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধন) আইন কার্যকর করা হয়েছিল, যা সরকারের হাতে সংবাদপত্র প্রকাশনার লাইসেন্স ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলে দেয়। তারপর ১৯৭৪ সালে স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট করা হয়। আইনটি শেখ মুজিব সরকারকে ‘শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা’ সংজ্ঞায়নে প্রকাশনা বন্ধ বা সাসপেন্ড করার ক্ষমতা দিয়ে গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরতে সাহায্য করে। এই আইনের জোরে ১৯৭৩-৭৪ সালে সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনের অভিযুক্ত সম্পাদক, যারা শেখ মুজিব সরকারের বিভিন্ন অপকর্মের কঠোর সমালোচনা করেছেন লেখনীর মাধ্যমে, তাদের গ্রেপ্তার, প্রকাশনা বন্ধ করা ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই সময়ে দৈনিক গণকণ্ঠের সম্পাদক কবি আল মাহমুদ গ্রেপ্তার হন ‘রামনা হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে সমবেদনাপূর্ণ প্রতিবেদন লেখার অপরাধে। প্রকাশনা বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় ‘দ্য হলিডে, ফর ইন্সট্যান্স, হককথা। এ সময়ে জনমতের প্রবাহ শ্বাসরুদ্ধ করা হয়েছিল।
১৯৭৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল এ সময়টি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশে মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের জন্য রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের স্বর্ণযুগ। ৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ : সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনী অনুমোদিত হয়ে দেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫ : ‘শেখ মুজিব-কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।  ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন : ৪টি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ‘দ্য অভজারভার, দ্য বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক বাংলা ও দৈনিক ইত্তেফাক রেখে দেশের ২৯টি দৈনিক ও ১৩৮টি সাপ্তাহিক পত্রিকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে গণমাধ্যম কর্মী ও  সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির পথ সহজ হয়। এমনকি সরকার   নিয়ন্ত্রিত চারটি পত্রিকায় অপেশাদার আত্মীয় ও রাজনৈতিক অনুচরদের সম্পাদক হিসেবে বসানো হয়, যেন কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের সমালোচনা করা না হয়। শেখ মুজিব সরকার কর্তৃক গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার বিষয়ে, ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট, ১৯৭৫ সালের এক প্রতিবেদনে লিখেছে : ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সকল প্রাইভেট পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া ছিল গণমাধ্যমের শেষ নিঃশ্বাস ও স্বাধীনতার অবসান।’ 
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশ একটি ‘কাটআউট প্রোপাগান্ডা সিস্টেমে’ রূপ নিয়েছিল, যেখানে বাক্য-ভাষণ শুধু সরকারের ছাপানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই জনগণের কাছে পৌঁছাত। চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় মুজিব সরকারের যুক্তি ছিল, দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত, অস্থিতিশীল, ঘুষ, দুর্নীতি, খাদ্য সংকট, এই পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমের বিচিত্র খবর প্রচার দেশে সাম্য-স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বিঘ্ন সৃষ্টি করবে- এমন বিবেচনা থেকেই সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। সে সময়কার বিরোধী দল এবং দেশের বুদ্ধিজীবী মহল মুজিব সরকারের এই যুক্তি মেনে নেয়নি। তাদের যুক্তি, স্বাধীন সংবাদমাধ্যম হলো গণতান্ত্রিক সচেতনতামূলক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার পরীক্ষা। নিয়ম ভেঙে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত করা, মালিকদের রাজনীতিবিদ কর্তৃক ভয় দেখানো, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক সমস্যা- এসব নিয়ে লিখতে চাইলেও কোনো সাংবাদিক স্বাধীনভাবে লিখতে পারতেন না। তবে কোনো কোনো সাংবাদিক সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে না গিয়ে জীবন-জীবিকা রক্ষায় ‘কোডেড’ ভাষায় বা ভিন্ন আঙ্গিকে সংবাদ প্রকাশ করতেন। এভাবে সেনসর্ড সংবাদ প্রচার হওয়ায় গণমানুষের স্বাধীন মনোবৃত্তির সুপ্ত চেতনাও ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যায়। গণতন্ত্রের প্রকৃত আলোচনাও স্তিমিত হয় এবং মানুষ অজ্ঞতার গহ্বরে হারাতে থাকে। অনিবার্য হয় ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনা। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বীজ তার শাসনাকালের চরিত্রের মাঝেই নিহিত ছিল।
একদলীয় শাসন, দুর্নীতিবিরোধী গভীর সমালোচনা, প্রতিবাদী মুখ বন্ধ করার খায়েশ- এই তিনটির মিলিত প্রয়াস, একদলীয় শাসনের প্রাতিষ্ঠানিক আনুকূল্য তৈরি করে। এর পরের ইতিহাস বাংলাদেশ জানে। শেখ মুজিব পরবর্তী সামরিক ও বেসামরিক শাসন কালে জেনারেল জিয়া (১৯৭৭-৭৯), এরশাদের (১৯৮২-১৯৯০) যুগ ও তার পরবর্তী অন্যান্য সরকারের সময়ও কমবেশি সাংবাদিক ও সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের ওপর নিয়মিত চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। এসব বাকশালের মতো দমন-পীড়ন ছিল না। তবে দেশে সাংবাদিক আটক-নির্যাতনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। সাংবাদিকতা শুধু কাগজে সিল-স্ট্যাম্প নয়; এতে রাষ্ট্রের ভয়ভীতি ছাড়াই বিচার, নিরীক্ষণ, সমালোচনা করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরা একটি অন্ধকার অধ্যায়, যেখানে গণতন্ত্রের লড়াকু সৈনিক শেখ মুজিবের মতো নেতা চরম স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে এবং  গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।  সেই শিক্ষা আজও জীবন্ত। গণমাধ্যম বন্ধ মানেই গণতন্ত্র বন্ধ এবং পরবর্তী সভ্যতা-শৃঙ্খলার পথে দেশের ইমারত ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা, কারও আমলেই ভিন্নমতের গণমাধ্যম নিরাপদ ছিল না। শেখ হাসিনার আমলে সৃষ্ট ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন’-এর মতো অবাধ তথ্য ও রাজনীতি-নিয়ন্ত্রণ আইন, দেশের  রাজনৈতিক বাতাসে দুশ্চিন্তার উদ্গীরণ ঘটিয়েছে। 
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করতে না পারলে আদতে পৃথিবীর কোনো দেশই গণতান্ত্রিক হয়ে উঠতে পারে না।  ১৯৭৪ সালের মার্চে গঠিত ‘ঈরারষ খরনবৎঃরবং ্ খবমধষ অরফ ঈড়সসরঃঃবব’ সিভিল সোসাইটি ও সাংবাদিক-স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে নিয়মনীতির আবেদন জানালেও সরকারের দৃষ্টিতে তা ‘দেশের স্বার্থে’ প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। মুজিব সরকার ১৯৭৩ সালে প্রিন্টিং প্রেস ও প্রকাশনা আইন সাবলীলভাবে কার্যকর করে। তবে ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট (ঝচঅ) গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে পাথেয় হিসেবে ব্যবহার হয়। এসপিএর ধারা ৩, ১৬-১৮, ১৯-২০-২৩ অনুসারে সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়, বয়সসীমা ছাড়াই আটক ও দুই থেকে ছয় মাস পর্যন্ত জরিমানা ও বিনাশ্রম দণ্ড আরোপের বিধান রাখা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতিমালায় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কঠোরতা ও দমননীতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৭১-৭২ সালে স্বাধীনতার চেতনায় বর্ণিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অঙ্গীকার হিসেবে আবির্ভূত, সে চেতনা ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে অপাংক্তেয় হতে শুরু করে। শেখ মুজিবের শাসনামলে গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা, এর কারণ, প্রভাব ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আমরা তার পরবর্তী শাসকদের ওপরও দেখতে পাই। 
দ্য হলিডে, দৈনিক গণকণ্ঠ, হককথার মতো স্বাধীন প্রকাশনাগুলোর প্রকাশনা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ও হুমকির মুখে পড়তে হয়। বিশেষ করে ঝচঅ-এর ধারা ১৬-১৮-১৯-২০-২৩ অনুসারে সাংবাদিকদের বিচার ছাড়াই আটক করার বিধান রাখা হয়। ঈধসনৎরফমব ঔড়ঁৎহধষ ড়ভ অংরধহ ঝঃঁফরবং-এ প্রকাশিত গবেষণায় উল্লেখ রয়েছে যে, ঝচঅ-এর ধারা ৩ অনুসারে সাংবাদিকদের এমনকি ৯০-১২০ দিন বিনা বিচারে আটক রাখা যেত, যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় অন্তরায়। একটি  শক্তিশালী ও জীবন্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় কাঠামো বিনির্মাণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনস্বীকার্য। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের নিরাপত্তা  নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ অত্যাবশ্যকীয়।
১৯৭৫ সালের ১৬ জুন, রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাকশালের দর্শন অনুযায়ী একটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দুটি মাত্র সংবাদপত্রের (দৈনিক বাংলা ও বাংলাদেশ অবজারভার) ডিক্লারেশন বহাল রেখে, সব পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করেন। পরে ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ টাইমসকে নতুনভাবে ডিক্লারেশন প্রদান করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৪টি পত্রিকার প্রকাশনা সাময়িকভাবে অব্যাহত রাখে। এর আগে তিনি চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল গঠন করেন এবং এ ব্যবস্থাকে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে উল্লেখ করেন। এই বিপ্লব সফল করতেই তিনি চারটি দৈনিক পত্রিকা রেখে সব দৈনিক পত্রিকা বন্ধ করে দেন। ফলে কয়েক হাজার সাংবাদিক এবং সংবাপত্রে কর্মরত কর্মী বেকার হয়ে পড়েন। বেকারত্বের কশাঘাতে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তাদের জীবন। অন্যদিকে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের এই নগ্ন হস্তক্ষেপে রুদ্ধ হয়ে যায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, গোষ্ঠীর স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা। তখন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরকারের এই নির্যাতনমূলক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করার সাহস কারও ছিল না। তবে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ এই দিনটিকে সংবাদপত্রের কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, একটি শক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে তখন, যখন ইতিহাসের এই বেদনাদায়ক অধ্যায় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জনতার জান-মালের মতো স্বাধীন তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা যাবে।

লেখক : সাংবাদিক

প্যানেল

×