
সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বিশ্ব একটি নতুন বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে কি না। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালাময়ী পরিবেশ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং চীন-আমেরিকা প্রতিযোগিতার মাঝে এই প্রশ্ন আরও বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিমত হলো—বর্তমান বৈশ্বিক কাঠামোতে সরাসরি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা খুবই সীমিত।
বিশ্ব এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বাস্তবতা থেকে অনেক ভিন্ন। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ডিজিটাল সংযুক্তির ফলে যেকোনো বড় ধরনের যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যার প্রভাব পড়বে সকল রাষ্ট্রের ওপর, এমনকি যুদ্ধাবস্থায় থাকা দেশগুলোর মিত্রদের ওপরও।
বিশ্বের প্রধান পরাশক্তিগুলোর—চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—নানান কৌশলগত স্বার্থ থাকলেও, তারা সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে চায় না। চীন মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চায়, রাশিয়া নিজের সীমান্ত ও ইউক্রেন ইস্যুতে ব্যস্ত, আর যুক্তরাষ্ট্র চায় না আরও একটি যুদ্ধক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হতে।
বর্তমানে যুদ্ধ শুধু মাঠে নয়, তথ্যের জগতে—সোশ্যাল মিডিয়া, ভুয়া খবর, এবং AI-জেনারেটেড কনটেন্টেও চলছে। ফলে অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তাই সচেতনতা ও তথ্য যাচাই এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা যতটা বলা হচ্ছে, বাস্তবে সেটা এখনো দেখা যাচ্ছে না। বিশ্লেষকদের মতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ভয়াবহ সংঘাতের সম্ভাবনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে খুবই সীমিত। যুদ্ধের ঝুঁকি রয়েছে, উত্তেজনা রয়েছে, তবে বিশ্ব এখন অনেক বেশি সংযুক্ত, পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল এবং যুদ্ধবিরোধী কাঠামো ও সচেতনতা অনেক শক্তিশালী।
সানজানা