
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল- যে সময়েই হোক না কেন, নির্বাচন কমিশনের সেই প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ভোটের আট-দশ মাস আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এ মুহূর্তে ঘোষণা সম্ভব নয়। ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করে ধারণা পাওয়ার পরই ইসি সিদ্ধান্ত নেবে। রবিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি এসব কথা বলেন। সিইসি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১১ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। এক্ষেত্রে ভোটের ৫৫-৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই স্পষ্ট বার্তা ভোট দেওয়ার জন্যে উন্মুখ দেশবাসীর জন্য স্বস্তিদায়ক ও আগ্রহ-উদ্দীপক।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি অবশ্য এমনও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এটা এখনো তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ছয় মাস–আট মাস আগে ভোটের তারিখ বলার বিধান আইনে নেই। যৌথ বিবৃতিতে তিনি দেখেছেন যে, রমজানের আগেও নির্বাচন হতে পারে, তবে সেখানে ‘যদি’ আছে। সিইসির নিজের কথা হলেও এ অভিমত ও দোলাচল অস্বীকারের নয়। দেশবাসী প্রত্যাশা করে সরকারের পক্ষ থেকেই শুধু নয়, দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল থেকেও সিইসিকে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ কিংবা মাস বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হবে। তাঁর উত্থাপিত কথিত ‘যদি’ বিষয়ে অবশ্য সরকারের তরফ থেকেই কয়েক মাসের মধ্যে বাস্তবতা জানাতে হবে। সুষ্ঠু ও সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা চাই।
নির্বাচন কমিশনের মূল অঙ্গীকার হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করা। এই লক্ষ্যে কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে যেসব বাধা আসতে পারে তার অন্যতম হচ্ছে সরকারের কোনো সংস্থা যাতে হয়রানিমূলক মামলা না করে। সুষ্ঠু ভোটের ক্ষেত্রে আরেকটি বাধা অর্থ ও পেশিশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা। এ ধরনের ১৪টি বাধা চিহ্নিত করে কীভাবে তা মোকাবিলা করা হবে, নিজেরাই সেই কর্মপরিকল্পনা কয়েক বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটাররা আশা করেন, সব বাধা অপসারণ হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সরকারের যেমন দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে, তেমনি দায় ও অঙ্গীকার রয়েছে দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের। মনে রাখতে হবে বহু বছর পর দেশের নাগরিকদের সামনে সুযোগ আসছে সম্পূর্ণ নিজের পছন্দে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের। তাই আশা করা যায়, এবারের ভোট সত্যিকারার্থেই হয়ে উঠবে আনন্দপূর্ণ এক উৎসব। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য এখানেই।
প্যানেল