ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

রোদে-ঘামে গড়া ভালোবাসার প্রতিমূর্তি—আমার আব্বু

মতিন গাজী, কন্টিবিউটিং রিপোর্টার,যশোর

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ১৫ জুন ২০২৫

রোদে-ঘামে গড়া ভালোবাসার প্রতিমূর্তি—আমার আব্বু

জুম্মায় নামাজের পর আমার আব্বুর সাথে তোলা একটি ছবি।

জীবনে আমাদের অনেক প্রিয় মানুষ থাকে, তবে একজন মানুষ আছেন যিনি নিঃশব্দে সব দিয়ে যান, কিছু ফেরত চান না—তিনি হলেন আমার বাবা, মো. সোহরাব গাজী।পেশায় তিনি একজন ছোটখাট গাড়িচালক। দিনভর রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তায় থাকেন, কখনো ক্লান্তি প্রকাশ করেন না। অথচ আমি জানি, তাঁর শরীরের প্রতিটি কণায় কতটা পরিশ্রম জমা হয় প্রতিদিন।

কিন্তু সেই পরিশ্রমের বিনিময়ে তিনি শুধু চেয়েছেন আমার মুখে একটুখানি হাসি, আমার স্বপ্নগুলোকে পূরণ করতে। আমার শৈশব, আমার খেলনা, স্কুলে নতুন ব্যাগ, কলেজে ভর্তি ফি কিংবা কোনো এক ফাল্গুনে নতুন জামা—একটিও চাহিদা অপূর্ণ রাখেননি বাবা। হয়তো নিজের জন্য নতুন জামা কেনার সময় পাননি, কিন্তু আমার ইচ্ছেগুলো যেন তাঁর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হয়ে উঠেছিল।

তাঁর সেই গায়ের কালো রঙের পাঞ্জাবি, মাথার ঘামে ভেজা রুমাল, ভাঙা স্যান্ডেল—সবই আজ আমার কাছে রাজকীয় সম্মানের প্রতীক। কারণ সেই মানুষটি একটিবারও নিজের সীমাবদ্ধতা আমাকে বোঝাননি। তিনি নিজেই ছিলেন আমার জন্য সীমাহীন ভালোবাসার উৎস। আজ আমি যা কিছু, তার পেছনে এই গাড়িচালক বাবার ঘাম, ত্যাগ আর অকুণ্ঠ ভালোবাসা জড়িয়ে আছে।

অনেকে পেশা দিয়ে মানুষের মান-মর্যাদা বিচার করে, কিন্তু আমি জানি—আমার বাবার মতো মহৎ মানুষ খুব কমই হয়।

আমার বাবা মো: সোহরাব গাজী—তিনি শুধু গাড়ি চালান না, তিনি আমাদের স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ তৈরি করে দেন। তিনি আমার জীবনের স্থিতিশীলতা, আমার সাহস, আমার আস্থা—একটি জীবন্ত বটবৃক্ষ।

Mily

×