ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুই ভুয়া সাংবাদিক জনতার হাতে আটকের পর গণপিটুনি

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৫ জুন ২০২৫

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুই ভুয়া সাংবাদিক জনতার হাতে আটকের পর গণপিটুনি

ছবি: জনকণ্ঠ

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভরসার মোড় এলাকায় সময় টিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক হন নামধারী দুই ভুয়া সাংবাদিক। পরে আটক হওয়া ওই দুই ভুয়া সাংবাদিককে গণপিটুনি দেয় জনতা। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।

আটক দুই ভুয়া সাংবাদিক হলেন, সময়ের কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল ও মুক্ত খবর পত্রিকার প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু।

স্থানীয়রা জানান, নামধারী দুই ভুয়া সাংবাদিক খিদমাতুল কোরআন আদর্শ বালিকা, নূরানী ও হাফেজিয়া মাদরাসায় আসেন। মাদরাসার প্রিন্সিপালকে পরিকল্পিতভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে এক শিক্ষার্থী ও তার দাদিকে ফুসলিয়ে প্রিন্সিপালের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং প্রিন্সিপালের সাথে কথা কাটাকাটি শুরু করেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ দীর্ঘ ৫ ঘন্টা ওই নামধারী দুই ভুয়া সাংবাদিককে আটকে রাখলে কথিত সংগঠন জেলা প্রেস ক্লাব, কুড়িগ্রাম এর সেক্রেটারি পরিচয়ে আমিনুর রহমান নামে আরেক সাংবাদিক তাদেরকে উদ্ধার করতে আসে। পরে শতশত মানুষের সামনে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নিলে উত্তেজিত জনতা নামধারী দুই ভুয়া সাংবাদিককে ঘটনা স্থলে দফায় দফায় গণপিটুনি দেয়। বর্তমানে চিকিৎসা নিতে সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

রুবেল আহমেদ নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুজন মাদরাসায় ঢোকেন। প্রিন্সিপালের সাথে কথা কাটাকাটি শুরু করেন। পরিকল্পিতভাবে প্রিন্সিপালকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অপবাদ দেন তারা। এতে করে হুজুরের সুনাম ও সম্মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে। হুজুর আমাদের এলাকার অত্যন্ত ভালো লোক। আমরা সবাই তাঁকে ভালোবাসি। তিনিও আমাদেরকে ভালোবাসেন।

ফারুক আহমেদ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সাংবাদিক পরিচয় দেয়া দুই ব্যক্তি মাদরাসার প্রিন্সিপালের সাথে তর্কাতর্কির বিষয়টি জানতে পারি। পরে ওই দুই সাংবাদিকের কাছ থেকে তর্কাতর্কির কারণ জানতে চাইলে এক সাংবাদিক নীরব থাকলেও মোস্তফা নামের অপর সাংবাদিক হুজুরকে মিথ্যা অপবাদ চিল্লাপাল্লা শুরু করেন। স্থানীয় জনতা ওই দুই সাংবাদিক আটক করলে আমরা কয়েকজন এসে উদ্ধার করি। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া ওই দুই ব্যক্তি যেন পরবর্তীতে এমন অপরাধ না করে সেজন্য জেলা প্রেস ক্লাব সংগঠনের সেক্রেটারি আমিনুর রহমান ও পুলিশের মধ্যস্থতায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

মাদরাসাটির প্রিন্সিপাল আনিছুর রহমান জানান, সাংবাদিক পরিচয় দেয়া দুই ব্যক্তি আমার নিকট আসেন। প্রথমে সময় টিভির সাংবাদিক বলে নিজেকে দাবি করলেও মোটরসাইকেলে সময়ের কাগজ পত্রিকার নাম দেখা যায়। তারা আমাকে একটি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সেটির সমাধান টানতে বলেন। আমার বিরুদ্ধে তাদের দেয়া মিথ্যা অপবাদকে আমি অস্বীকৃতি জানালে পুনরায় তারা আমাকে সমাধান টানতে বলেন এবং টাকা দাবিসহ নানাভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, নামধারী ওই দুই ভুয়া সাংবাদিক জেলা প্রেস ক্লাব সংগঠনের সদস্য বলে জানা গেছে।

আবির

×