শুরু হলো নতুন মন্ত্রীসভার যাত্রা। নতুন শপথে বলীয়ান হয়ে তারা গড়ে তুলবেন উন্নত ও সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ। সব বাধা-বিঘ্ন উপড়ে ফেলে, সকল অন্ধকার ঘুচিয়ে, মানবকল্যাণে এক নতুন দিশারী ও কাণ্ডারি হিসেবে তারা এগিয়ে নেবেন দেশ ও জাতিকে। অতীতের উন্নয়ন ধরে রেখে ভবিষ্যতের অগ্রগতির রথে চড়ে যেতে হবে তাদের। উন্নয়নের চাকার গতি শ্লথ নয়, আরও বেগবান হয়ে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। টানা দশ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনার ধারাবাহিকতায় আগামী পাঁচ বছরে দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করার স্বপ্ন পূরণই হবে ব্রত। দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে এক গর্বিত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে থাকতে হবে অবিচল। আগামী বছর ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীতে ‘মুজিববর্ষ’ পালন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সাড়ম্বরে পালন করার মহালগ্ন এখন সামনে। বাঙালী জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে নতুনভাবে শপথ নেয়া সরকারকে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা ও সমৃদ্ধির সকল সুযোগ এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণের সারথী হবেন নয়া মন্ত্রিসভার সদস্যরা। গড়ে তুলতে হবে জাতির পিতার কাক্সিক্ষত ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভূখ-ে জঙ্গীবাদ, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন শক্তিকে প্রশ্রয় না দেয়ার নীতি অব্যাহত রাখার জন্য পরিকল্পনানুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। নয়া সংসদ সদস্যরা ইতোমধ্যে শপথও নিয়েছেন। তবে এখনও শপথ নেননি বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট সদস্যরা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করেছে। শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। একই সঙ্গে ৪৬ জন মন্ত্রীও শপথ নিয়েছেন, যাদের ৩১ জনই নতুন। টেকনোক্র্যাট কোটায়ও রয়েছেন তিনজন মন্ত্রী। সামনে আরও অনেকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে প্রচার রয়েছে। এবারই প্রথম মন্ত্রীদের নাম আগেভাগে জানানো হয়েছে এবং তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। এমনকি দফতরও বণ্টন করা হয়েছে একই সঙ্গে, যা অতীতে কখনও হয়নি। এই নাম জানার জন্য শপথ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। নির্বাচনে বিপুল বিজয় জনমনে নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছে স্বাভাবিকভাবেই। বিশেষ করে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহার দেশের মানুষের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তাই আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তা পূরণে নবগঠিত মন্ত্রিসভাকে উদ্যমী হতেই হবে। আর তাদের ওপরই নির্ভর করবে নতুন সরকারের সাফল্য। শেখ হাসিনা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রকৃতই সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। পরিচয় দিয়েছেন প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির। এর আগে তিন দফা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে যে উচ্চমাত্রায় উন্নীত করেছেন তাতে জনগণের সমর্থন তার প্রতি ক্রমশ বেড়েছে। উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশকে সমৃদ্ধতর করার কাজটি তিনিই পারেন সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বহাল রাখতে দেশবাসী তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি তা যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন বলে জনগণের প্রত্যাশা। একাত্তরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পথচলা বাংলাদেশ থেকে স্বাধীনতার শত্রু ও ধর্মান্ধদের বিনাশ হোক এটা এখন সবার চাওয়া। নতুন করে তিনি আগামীর পথচলা শুরু করেছেন। নবযাত্রায় তিনি যে সহকর্মীদের বেছে নিয়েছেন তারা দায়িত্ব, কর্তব্য, কর্মনিষ্ঠা, সততা, দূরদর্শিতায় বলীয়ান হয়ে যুগোপযোগী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবেন এমন প্রত্যাশা স্বাভাবিক। মানুষের আস্থার প্রতিদান প্রদানে নয়া সরকার সদাজাগ্রত থাকবে, দেশবাসী তাই চান।
শীর্ষ সংবাদ: