ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ঢাকার দিনরাত

দাবদাহে বেশি বেশি মানবিক উদ্যোগ নেয়া চাই

ক্রাইম ছবিতে এমনটি দেখা যায়। মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দিল, আর গাড়িতে আগুন লেগে গেল। ঢাকার রাস্তায় অবিকল এমন ঘটনা কি আগে ঘটেছে? ভাগ্যিস এতে মানুষ মারা যায়নি। যদিও বাইক চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। আশপাশের অন্য কোনো চলন্ত যানে আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। বনানীর সড়কে ঘটা এই হতবাক করা ঘটনা থেকে বাস চালকরা যদি শিক্ষা নেন, তবে মানুষ উপকৃত হবে।

সত্যি বলতে কি বাস চালকরা তেমন পরোয়া করেন না। ঈদের ছুটিতে আমরা দেখেছি বাস-মিনিবাস চালিয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অল্পবয়সী নবিশেরা। নবিশদের হাতে যারা গাড়ির চাবি তুলে দেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা চাই

ঢাকা যেন তপ্ত দ্বীপ, এই প্রধান শিরোনাম রবিবারের জনকণ্ঠের। তিন দশকে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার তথ্য দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে তাপমাত্রা বাড়ার কারণও। সেগুলো হলো : মহানগরীর গাছপালা, জলাধার ও উন্মুক্ত স্থান কমে যাওয়া; ভবন, আবর্জনার স্তূপ, বর্জ্য ও প্লাস্টিকের বেড়ে যাওয়া। বলাবাহুল্য, কেবল ঢাকাতেই নয়, সারা দেশের প্রধান সংবাদই এখন তাপপ্রবাহ এবং মানুষের হাঁসফাঁস দশা।

এবার এই এপ্রিল মাসে টানা যতদিন তাপপ্রবাহ হয়েছে, তা গত ৭৬ বছরে হয়নি। গত বছর একটানা ১৬ দিন তাপপ্রবাহ হয়েছিল। এবার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে ১ এপ্রিল থেকে, আর এখনও চরশান। সত্যিই ভয়ঙ্কর এক এপ্রিল শেষ হচ্ছে। তবে মে মাস এবারের এপ্রিলকে ছাড়িয়ে যাবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন।

সড়কে জ্বলন্ত বাস
ক্রাইম ছবিতে এমনটি দেখা যায়। মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দিল, আর গাড়িতে আগুন লেগে গেল। ঢাকার রাস্তায় অবিকল এমন ঘটনা কি আগে ঘটেছে? ভাগ্যিস এতে মানুষ মারা যায়নি। যদিও বাইক চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। আশপাশের অন্য কোনো চলন্ত যানে আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। সংবাদটি পড়া যাক :
মোটরসাইকেলটি সড়কে ইউটার্ন নিচ্ছিল। এ সময় দ্রুতগতির একটি বাস তাতে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা দুজন ছিটকে রাস্তায় পড়েন এবং সেটি বাসের নিচে ঢুকে যায়। মোটরসাইকেলটিকে অন্তত ২০ গজ হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার পর সেটির ট্যাঙ্ক ফেটে আগুন ধরে যায় দুই গাড়িতেই। এ ঘটনা ঘটে শনিবার বিকেলে রাজধানীর বনানী এলাকায়। বাস ও মোটরসাইকেলটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের চালক। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে কোনো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তা জানতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে তার পরিচয় জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, বিকেল ৪টায় আগুনের খবর পায় তারা। এরপর কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। অবশ্য এর আগেই বাস ও মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। কুর্মিটোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, বাসটি ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় আসছিল। নৌবাহিনী সদর দপ্তরের কাছে ইউটার্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেলটি বনানীর দিকে ঘুরছিল। এ সময় বাসটি দ্রুতগতিতে এসে মোটরসাইকেলটিতে ধাক্কা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসের যাত্রীরা দ্রুত নেমে পড়েন। আগুনের ঘটনায় বনানী থেকে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক পুলিশ এক লেন বন্ধ রেখে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।  বনানী থানার ওসি কাজী সাহান হক বলেন, পোড়া মোটরসাইকেল ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়েছেন। 
বনানীর সড়কে ঘটা এই হতবাক করা ঘটনা থেকে বাস চালকরা যদি শিক্ষা নেন, তবে মানুষ উপকৃত হবে। সত্যি বলতে কি বাস চালকরা তেমন পরোয়া করেন না। ঈদের ছুটিতে আমরা দেখেছি বাস-মিনিবাস চালিয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অল্পবয়সী নবিশেরা। বরিশালের কথা নিশ্চয়ই স্মরণে আছে আমাদের। ঈদের ছুটিতেই সড়কে টোল দেওয়ার জন্য থেমে থাকা কয়েকটি গাড়ি পিষে ফেলেছিল একটি যান। নবিশদের হাতে যারা গাড়ির চাবি তুলে দেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা চাই। একজন অদক্ষ বেপরোয়া চালকের জন্য অনেক জীবন প্রদীপ এভাবে নিভে যেতে পারে না। 

বাড়ছে গরম চরম কষ্টে মানুষ
ঢাকার গরম চরম আকার ধারণ করেছে। শুধু এ বছরই নয়, আগামী বছরগুলোতেও গরম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই গরমের সঙ্গে কিভাবে মানুষ সহাবস্থান করে জীবন বাঁচাবে, সে প্রশ্নটিই এখন বড় হয়ে উঠেছে। বলা দরকার রাতারাতি গরম কমানোর কোনো সুযোগ বা ব্যবস্থা নেই। আপনি আপনার ঘরে এসি চালিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাপমাত্রা কমিয়ে ফেলে স্বস্তিবোধ করতে পারেন। কিন্তু গোটা শহরকে তো আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ভেতর মুড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। সে জন্য চাই মহাপরিকল্পনা এবং ধীরে ধীরে তার বাস্তবায়ন। 
ঢাকা শহর যে অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠায় চলমান তাপপ্রবাহে ঢাকাবাসীর অতিরিক্ত গরম অনুভূত হচ্ছে, সে বিষয়টি জলবায়ুবিজ্ঞানী ড. শামসুদ্দিন শহিদের বক্তব্যেও উঠে এলো। রোববার সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন : সাধারণত তাপপ্রবাহ হচ্ছে একটি উষ্ণ বায়ুপ্রবাহ, যা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়।  যে অঞ্চলের ওপর তা প্রবাহিত হয়, সেখানে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু ওই তাপের পাশাপাশি যদি বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে, তাহলে গরমের অনুভূতি বেড়ে যায়।

কোনো এলাকায় যদি কংক্রিটের অবকাঠামো বেশি থাকে, দিনের সূর্যের আলো সেখানে জমা হয়। এ কারণে বয়ে যাওয়া তপ্ত বায়ুর সঙ্গে জমে থাকা ওই তাপ যুক্ত হয়ে গরমের অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। গাছপালা কম থাকলে ওই গরমের অনুভূতি থেকে রক্ষা পেতে মানুষ ছায়া বা আশ্রয় পায় না। অপরিকল্পিত নগরায়ণের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে বায়ুপ্রবাহের পথ না রেখে যদি শহরে অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণ করা হয়, তাহলে বাতাস ঠিকমতো প্রবাহিত হতে পারে না, ফলে গরমের কষ্ট বেশি হয়।

ভারতের কলকাতা ও আহমেদাবাদের মতো শহরগুলোয় বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনসহ জনপরিসরগুলোয় সিটি কর্পোরেশন গোসল ও খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করে, যেখানে শহরের বস্তিবাসী, ট্যাক্সিচালক ও হকারদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষেরা সেবা নিতে পারেন। এভাবে ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে একটি শহরের অতি উষ্ণ তাপমাত্রার বিপদ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করা সম্ভব। 
কলামের শুরুতেই বলেছি, ঢাকা যেন তপ্ত দ্বীপ, এই প্রধান শিরোনাম রবিবারের জনকণ্ঠের। ওই জলবায়ুবিজ্ঞানী আরও বলছেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রাম প্রাকৃতিকভাবেই যথেষ্ট আরামদায়ক শহর ছিল। এখানে গাছপালা কেটে, জলাভূমি ভরাট করে এবং সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ করে শহরগুলোকে তাপীয় দ্বীপে পরিণত করা হয়েছে। এখন শহরে নতুন করে জলাভূমি তৈরি করা অনেক কঠিন। কিন্তু গাছ তো চাইলেই লাগানো সম্ভব। শহরে কয়েক হাজার গাছ লাগিয়ে কোনো লাভ হবে না।

পুরো শহরের সব ফুটপাত, নতুন আবাসিক এলাকার ২০ শতাংশজুড়ে গাছ লাগাতে হবে। বিশ্বের অনেক শহরে গাছের চারা না লাগিয়ে পরিণত গাছ এনে রোপণ করা হয়। এতে কয়েক বছরের মধ্যে গাছগুলো ছায়া ও অন্যান্য সেবা দেওয়া শুরু করে। আমাদের সেই পথে যেতে হবে।’
জানি না, ঢাকার মেয়রদ্বয় তার বক্তব্যের মর্মকথা বুঝবেন কিনা, কিংবা বুঝলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কিনা। তবে চাইলে সত্যিকারের কাজ করা সম্ভব। স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে সাময়িক ও স্বল্প আকারে কৃত্রিম বৃষ্টিতে ভিজে আত্মাশ্লাঘা অনুভব করার বিষয়টি ঢাকাবাসীর কাছে হাস্যকর হয়ে উঠতে পারে, যদি মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে স্বস্তি বাড়ানোর সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়।

আমরা আগেও দেখেছি ঢাকার কয়েকটি রাস্তায় বায়ুদূষণ কমানোর লক্ষ্যে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে পানি ছিটাতে। ফলাফল কী হয়েছে? ঢাকা হয়েছে বায়ুমান বিচারে পৃথিবীর সবচাইতে দূষিত শহর। তাই লোক দেখানো বা লোক হাসানো নয়, সত্যিকারের কাজ করা চাই। 
তবে প্রচণ্ড গরমে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ড এলাকায় বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। ঢাকা উত্তরের মেয়র বিভিন্ন এলাকার দোকানদার, ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির নেতাদের অনুরোধ করেছেন প্রতিটি দোকান, শপিং মল, মার্কেটের সামনে পানি খাওয়ার জন্য একটি ড্রামের ব্যবস্থা করতে। যাতে যে কেউ পানি পান করার সুযোগ পায়। এই আহ্বানও প্রশংসাযোগ্য।

দাবদাহে মানবসেবা
দুর্যোগে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এটাই স্বাভাবিকতা। আসলে কি সেটি হচ্ছে? শীতে প্রচারসর্বস্বতার বাইরে আন্তরিকভাবে অনেক ব্যক্তি ও সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণে অংশ নেন। গরমে এখন পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ফ্যান বিতরণের সংবাদ মেলেনি। তবে দিনের বেলা দুঃসহ গরমের ভেতর রিকশা ও ভ্যান চালকদের ডাবের পানি খাওয়াচ্ছেন, মাথায় ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও আমার মোবাইল ফোনে এসেছে। যদিও এটি ঢাকার বাইরের চিত্র, দাতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য।

এরপর খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখা গেল, রংপুর নগরীর ২০০ রিকশাচালকের মাঝে ক্যাপ ও ছাতা বিতরণ করেছেন ক্রিকেটার আরিফা জাহান বীথির প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন মোড়ে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মধ্যে লেবুর শরবত বিতরণ করছেন যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। কিন্তু ঢাকার খবর তেমন পেলাম না। অথচ ঢাকা মহানগরীতেই সারা দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি শ্রমজীবী মানুষ দিনের বেলা ঘর থেকে বের হন।

এমন হতে পারে এ কলাম লেখার দিন, মানে রোববার পর্যন্ত গণমাধ্যমে দাবদাহে মানবসেবার উল্লেখযোগ্য সংবাদ আসেনি।  খুঁজতে খুঁজতে একটিমাত্র সংবাদ পেলাম। হয়তো সামনে আরও খবর পাব। পেলেই এই কলামে সেটি তুলে ধরব। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগের খবর যত বেশি প্রচার পায় ততোই ভালো। কেননা এতে অন্যেরা উদ্বুদ্ধ হন।
চলমান তীব্র দাবদাহে পিপাসার্ত মানুষের মাঝে সুপেয় শরবত (লেবু, ট্যাং, চিনি ও পুদিনাপাতা মিশ্রিত)  বিতরণ করছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’। রাজধানীসহ সারা দেশের স্বপ্ন আউটলেটের সামনে শনিবার সকাল থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির নাসির জানান, তীব্র গরম পরিস্থিতিতে আমাদের আশপাশে অবস্থান করা শ্রমজীবী মেহনতী মানুষদের ভুলে গেলে চলবে না। তাই তাদের উদ্দেশে মূলত এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মে দিবস এবং জাতীয় প্রচারমাধ্যম
মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস আগামীকাল। ছুটির এ দিনটি নানা উৎসবে আয়োজনে কাটায় শ্রমজীবী মানুষ। তরুণ বয়সে ঢাকায় আরণ্যক নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। দলটি মে দিবস পালন করত। শহীদ মিনারে পথনাটক পরিবেশিত হতো, বিশিষ্ট কবিরা কবিতা পড়তেন। বহু বছর পর এবারের মে দিবসের কোনো আয়োজনে যুক্ত হওয়ার সুযোগ ঘটল। অপ্রত্যাশিতভাবেই আমন্ত্রণ পেলাম বিটিভিতে মে দিবসের একটি বিশেষ অনুষ্ঠান গ্রন্থনা-উপস্থাপনা করার জন্য।

ঢাকা কেন্দ্রের প্রধান অর্থাৎ বিটিভির মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আক্তার ফোনে জানালেন, ডিজি মহোদয় আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। কিছুক্ষণের মধ্যে মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ফোন করে জানালেন, মে দিবস উপলক্ষে তিনি কী ধরনের অনুষ্ঠান চাইছেন আমার কাছ থেকে। দেশে করোনা আসা পর্যন্ত বিটিভিতে আমার নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘বিশ^সাহিত্য’ সম্পর্কে হয়তো তিনি জেনে থাকতে পারেন।

কিছু পরামর্শ দিলেন তিনি মে দিবসের অনুষ্ঠান বিষয়ে। ভালো লাগল। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহাঙ্গীর আলম গত বছর জুন মাসে মহাপরিচালক হিসেবে বিটিভিতে যোগ দিয়েছেন। আর ঢাকা কেন্দ্রের জিএম হিসেবে মাহফুজা আক্তার দায়িত্ব নিয়েছেন গত বছরের শুরুতেই। সত্যি বলতে কি, এ দুজনের পরিকল্পনা-পরিচালনায় বিটিভির অনুষ্ঠানমালায় গতিসঞ্চার হয়েছে, বৈচিত্র্যও এসেছে। তা না হলে কি আর মে দিবস স্মরণে চার-চারটি অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সাধারণত দুই ঈদ, পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস এবং পনেরোই আগস্ট স্মরণে বিটিভিতে একগুচ্ছ বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার হয়ে আসছে। এই সংস্কৃতিতে যুক্ত হলো শ্রমিকদের মে দিবসও। খুবই ইতিবাচক ঘটনা।
প্রসঙ্গত বলছি, মাহফুজা আক্তার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্য বিটিভির ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিটিভিতে কন্ট্রোলার/প্রোগ্রাম ম্যানেজার পদে প্রশাসন, অনুষ্ঠান, নাটক ও নৃত্য শাখার প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

পাশাপাশি তিনি তথ্যচিত্র, ডকু-ড্রামা, নাটক, নারী ও শিশুবিষয়ক অনুষ্ঠান নির্মাণ ও পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান নির্মাণের অভিজ্ঞতা আছে তার। অডিও-ভিজুয়াল মিডিয়ায় পেশাগত ও সৃজনশীল দায়িত্ব পালন এবং নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে নারীর অগ্রযাত্রার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে এভাবেই। 

২৮ এপ্রিল ২০২৪  
[email protected]

×