ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্যপ্রযুক্তিতে গবেষণা

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

তথ্যপ্রযুক্তিতে গবেষণা

তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নতি করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অত্যন্ত জরুরী। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা দেশের জন্য সুখবর। চুক্তির আওতায় এমআইটির আধুনিক প্রযুক্তি (ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডীপ লার্নিং, বিগ ডেটা, ইন্টারনেট অব থিংসের ওপর গবেষণা কার্যক্রম চালানো হবে। এর ফলে নিঃসন্দেহে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। এমআইটি একটি বেসরকারী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যার সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এমআইটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বিপ্লব ও গবেষণায় অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তির সমাবেশ ঘটানোর জন্য নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। আধুনিক ও অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এমআইটির সঙ্গে কার্যকর ও টেকসই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ২০২১ সালের আগেই দেশে ৭০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি করা হবে। উদ্ভাবনে সফলতা আনা, উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সরকার ইনোভেশন ডিজাইন এ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ একাডেমি (আইডিয়া) শীর্ষক এক বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য সরকার ইতোমধ্যে যেসব বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে তার ভেতরে রয়েছে গাজীপুরে হাইটেক পার্কশিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম। ৬৪ জেলার নির্বাচিত সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইসিটি ‘ক্যারিয়ার ক্যাম্প’ চলছে। ক্যারিয়ার ক্যাম্পের উদ্দেশ্য, দেশের শিক্ষিত তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহ বাড়ানো। একই সঙ্গে তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা। বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব। এবারের জাতীয় বাজেটেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। আউটসোর্র্সিংয়ে বিশেষ প্রণোদনার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। জনশক্তির তুলনায় দেশে শ্রমবাজার অপর্যাপ্ত থাকায় বেকারত্ব দূর করতে এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ভাল রোজগার করছেন। অনলাইনে এই ফ্রিল্যান্সিংয়েরই পোশাকি নাম আউটসোর্সিং। এখন স্বাধীনচেতা, কর্মঠ এবং উচ্চাভিলাষী তরুণদের মধ্যে এটি প্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ, কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে ঘরে বসে অর্থোপার্জনের এ কাজটি বর্তমান বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে চলে এসেছে। আউটসোর্র্সিং থেকে এখন আয় হয় ৮০০ হতে ১০০০ কোটি টাকা। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে এ খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালায় আইসিটির উন্নয়নকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানি বাজার ধরার তাগিদে। এছাড়া স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোর্স চালু করা দরকার, যাতে করে আমাদের নতুন প্রজন্ম সাইবার নিরাপত্তা এবং ইনফরমেশন সিকিউরিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে দেশের আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। এমআইটির সঙ্গে গবেষণা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশে নতুন ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এমনটাই প্রত্যাশিত।
×