ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী

সরকারের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৬ মে ২০২৫

সরকারের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই

সেনানিবাসে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা

সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের বিরোধ বা মুখোমুখি অবস্থান নেই বলে জানিয়েছে সেনা সদর। রাষ্ট্রের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। 
সোমবার ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা। 
তিনি বলেন, সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব তথ্য প্রচারিত হচ্ছে, তা সত্য নয়। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সবার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে করিডর ইস্যু, সীমান্তে পুশ ইন, মব ভায়লেন্স, কেএনএফসহ নানা বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। একই সঙ্গে বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকা-ও তুলে ধরা হয়েছে।   
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা বলেন, সেনাবাহিনী সব সময় দেশের সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে এবং আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি। বন্দর-করিডর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হয়Ñ এমন কোনো বিষয়ে সেনাবাহিনী কখনোই সম্পৃক্ত হবে না। দেশের স্বার্থের বাইরে গিয়ে সেনাবাহিনী কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। করিডরের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি প্রশ্ন। এটা আমাদের দেশ, আমাদের সবার দেশ। এই দেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আমরা সবাই জড়িত।

এ দেশকে ভালো রাখতে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। সুতরাং আমি মনে করি না যে, এ বিষয়টি এমন একটি পর্যায়ে গেছেÑ যেভাবে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার এবং সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করছে। আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের সঙ্গে কাজ করছি এবং সরকারের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করছি। সরকার এবং সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে একে অপরের সহযোগিতায় কাজ করছে। করিডরের সঙ্গে বর্ডারে আরসার মুভমেন্টের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ দুটি বিষয় আলাদা। সরকার ও সেনাবাহিনী ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করছে, এ রকম যেন আমরা না ভাবি। সরকার ও সেনাবাহিনী একই সঙ্গে কাজ করছে, ভবিষ্যতেও আমরা আরও সুন্দরভাবে কাজ করে যাব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। 
ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে নাগরিকদের ‘পুশ ইন’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে বিষয়গুলো মোকাবিলা করছে। তবে যদি কোনো কারণে প্রয়োজন হয় বা সরকার আদেশ দিলে এ বিষয়ে সেনাবাহিনীও কাজ করবে। তবে বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। 
চট্টগ্রামের একটি কারখানায় সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের ৩০ হাজার পোশাক পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, কেএনএফ মূলত বম কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠন। পোশাক পাওয়ার সংবাদটি একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ। এ সংগঠনটির অস্ত্রের ব্যবহার আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখছি। তাদের আক্রমণে আমাদের কয়েক সেনাসদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন এবং আহত হয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে নিশ্চয়ই এটা ভালো কোনো খবর নয়। ৩০ হাজার ইউনিফর্ম পাওয়ার ছবি দেখার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে কথা বলেছিÑ এটা আসলে ব্যাপারটা কি এ বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। এ পোশাক কাদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল সেটা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ চলছে। এই সংগঠনের সঙ্গে অন্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।

কিন্তু বম কমিউনিটির জনসংখ্যা মাত্র ১২ হাজার। সুতরাং এই ৩০ হাজার ইউনিফর্ম কেএনফের জন্য ছিল কি না সেটা খুঁজে দেখার সুযোগ আছে। এ বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। বিষয়টি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিষয়টিকে আমরা হাল্কাভাবে নেইনি নিশ্চিত করে বলতে পারি। এ ব্যাপারে যতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমাদের দায়িত্বের মধ্যে যেটা পড়ে সেটা আমরা করব। গত এক মাসে কেএনএফের এক হাজার ৯৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট ১৪ হাজারের বেশি কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চার হাজারের বেশি মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 
মব তৈরির বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, কেউ মব তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।  
বাংলাদেশ একটা ছায়া যুদ্ধের মধ্যে আছে সেটা বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হচ্ছে। আরসা বাংলাদেশের লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে ঢুকে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক সময় বিভিন্ন মাধ্যমে খবর আসছে তাদের কাছে ভারি ভারি অস্ত্র আছে, তাদের কাছে এ অস্ত্র কোথায় থেকে আসছে। এসব বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আসলে বর্ডার কি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে নাকি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যদি এক লাইনে উত্তর দিতে চাই অবশ্যই আমরা বর্ডার কম্প্রোমাইজ (আপোস) করিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গায়ে বিন্দুমাত্র শক্তি থাকবে আমরা কখনোই বর্ডার নিয়ে আপোস করব না। এটা আমাদের দেশ আর দেশকে আমরা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করব। কোনো একটা সম্প্রদায়ের মাধ্যমে এ দেশের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হতে পারে সেটা কখনোই হবে না।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বর্ডার অত্যন্ত জটিল একটি পরিস্থিতির মুখে আছে। মিয়ানমারের সরকারের অস্তিত্ব বিলীনের মুখে। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যটিকে প্রায় দখল করে নিয়েছে। তাদের দখলে রাখাইন রাজ্যের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ রয়েছে। আরাকান আর্মি কোনো অথরাইজড সংগঠন নয়। এ জায়গাটাতে না আছে কোনো সরকারের অস্তিত্ব, না আছে আরাকান আর্মিকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বর্ডারে যে পরিস্থিতি যে কোনো সময়ের তুলনায় সংবেদনশীল। সেক্ষেত্রে এই সময়ে ওই এলাকায় কিছু সশস্ত্র গ্রুপের মুভমেন্ট (চলাফেরা) করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তার মানে এই নয় যে, এটাকে আমরা স্বীকৃতি দেব বা দেখেও না দেখার ভান করব। এ ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতিতে এ ধরনের মুভমেন্ট হতে পারে।

কিন্তু আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই- বিজিবি প্রাথমিকভাবে ডিফারেন্টলি সাপোর্টেড বাই আর্মি (সেনাবাহিনীর দ্বারা ভিন্নভাবে সমর্থিত)Ñ আমরা এই বর্ডারে প্রচ-ভাবে নজরদারি রাখছি। এখানে যেন সার্বভৌমত্ব বিঘিœত হতে না পারে এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল আছি। তবে অবশ্যই এই মুভমেন্টটি উদ্বেগের বিষয় এবং কাক্সিক্ষত নয়। 
এর আগে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বিগত ৪০ দিনে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকা- তুলে ধরেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মব ভায়লেন্স ও সামাজিক নিরাপত্তা বিঘিœতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের সঙ্গে তুলনা করলে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে স্থিতিশীল বা কোথাও উন্নতিও আছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালের দায়িত্ব কেবল সেনাবাহিনীর একার নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্য সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতির আরও উন্নতি করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করবে- এমন গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই, এমনকি এ বিষয়ে আমাদের অভ্যন্তরেও কোনো আলোচনা হয়নি।’ 
৪০ দিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ॥ সংবাদ সম্মেলনে গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকা- তুলে ধরা হয়। ৪০ দিনে ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগস্ট এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও গত এক মাসে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইয়ে জড়িত ১ হাজার ৯৬৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০ মে ভাষানটেক এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২৮ রাউন্ড গুলিসহ সন্ত্রাসী হিটলু বাবুসহ তার গ্যাংয়ের ১০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।
৪০ দিনে যৌথ অভিযানে ৪৮৭ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট ৪ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, অবৈধ মদ। 
৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক মাসে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও যশোর ও সাতক্ষীরায় অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ জেলি মিশ্রিত চিংড়িসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক করা হয়েছে। 
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৯৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। যার মধ্যে ৩৬ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে ঈদের আগে ও পরে মিলে ২ সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘেœ যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের গুরত্বপূর্ণ বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিন-রাত টহল পরিচালনা, গাড়ির অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনসহ টিকিট কালোবাজারি অথবা অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রি রোধ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। যা ঈদুল ফিতরের মতোই মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। 
কোরবানির পশুহাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজ এবং ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য রোধে এবং মূল সড়কের পাশে পশু হাট বসতে না দিয়ে জনদুর্ভোগ কমাতে সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে। গত এক মাসে বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ টাওয়ার, মতিঝিলের শাহ জালাল ইসলামী ব্যাংক এবং ধামালকোট বস্তিতে অগ্নিকা-ের ঘটনায় সেনাবাহিনী ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বিতভাবে দ্রুততম সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। যার ফলে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।
২০২৪ সালের বন্যায় অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি জেলায় (কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম) দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষের জন্য বিশেষ আবাসন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। যা গত ৩০ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। সেনাবাহিনী ওই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক টাকা দিয়েই প্রকল্পটি সুন্দরভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করেছে। যা সকলের দ্বারা ভূয়সী প্রশংসিত হয়েছে এবং সততার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেশবাসী স্মরণ রাখবে বলে প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে ব্যক্ত করেন।
গত এপ্রিল ও মে মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এবং নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট ‘এ’ দল বাংলাদেশ সফরকালীন সময়ে হোটেলে অবস্থান, হোটেল হতে স্টেডিয়ামে গমনাগমন এবং খেলা চলাকালীন সময়ে বিসিবি, আয়োজক ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে। বৌদ্ধ পূর্ণিমা পালনে সারা দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনৈতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

×