দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস.এম. মাসুদুল হক এ ঘোষণা দেন।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। ১৯ জানুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। ২৬ জানুয়ারি শিক্ষকরা পদযাত্রার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পুলিশ শাহবাগে তাদের বাধা দেয়। এ সময় জলকামান, লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
সচিবালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে যুগ্ম সচিব মাসুদুল হক শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বলেন, “আপনাদের ছয় দফা দাবিসহ আরও কিছু বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রথম দফায় সকল ইবতেদায়ী মাদ্রাসা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ২০২৫ সাল থেকে অনুদানভুক্ত ১,৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করা হবে। এর পরে ২০২৬ ও ২০২৭ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে এই মাদ্রাসাগুলোকে জাতীয়করণ করা হবে। জাতীয়করণের ফলে এসব প্রতিষ্ঠান উপবৃত্তি, মিডডে মিল এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন সুবিধা পাবে।
জাতীয়করণের ঘোষণার পর আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আজকের ঘোষণা আমাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও যতক্ষণ না সরকারি গেজেট প্রকাশিত হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা নিশ্চিন্ত নই।”
ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জাতীয়করণের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে: অনুদানভুক্ত মাদ্রাসাগুলোকে এ বছরের মাঝে এমপিওভুক্ত করা; ২০২৬-২০২৭ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে জাতীয়করণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা; অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে উপবৃত্তি, মিডডে মিল এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
শিক্ষকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার নিবন্ধন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, মাদ্রাসাগুলোর স্বীকৃতি প্রদান এবং বেতন কাঠামোর উন্নয়ন।
সরকারের এই আশ্বাস শিক্ষকদের কতটা সন্তুষ্ট করতে পারবে এবং জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি কত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
এম.কে
