
মেগা প্রকল্প
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের নামে বড় ধরনের লুটপাটের খোঁজে এবার গণপূর্তে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া উন্নয়ন প্রজেক্টের নামে দুর্নীতির অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি। বুধবার দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান- শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা, টিউলিপ ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণের নামে ৪৯ হাজার কোটি টাকা লোপাট এবং শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে রূপপুরের সাইট প্রজেক্ট গ্রীন সিটি আবাসন পল্লীর ২৬০০ কোটি টাকার প্রজেক্টের সব নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
গেল বছরের ডিসেম্বরে ৯ মেগা প্রজেক্ট থেকে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে সংস্থাটি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এদিকে দুদকের মহাপরিচালক জানান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, নকশা পরিবর্তন, অনিয়মের অভিযোগে সাবেক দুই উপাচার্য একেএম নুরুন্নবী, নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, একেএম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আব্দুস সালাম বাচ্চু এবং এমএম হাবিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেছেন। এ ছাড়া ৩০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়া সম্পাদন করেছেন। ঠিকাদারের বিল থেকে কাটা নিরাপত্তা জামানতের টাকা ব্যাংকে এফডিআর আকারে জমা রেখে, সেই এফডিআরকে লিয়েনে দিয়ে ঠিকাদারকে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেন অভিযুক্তরা।
এতে বিশ্ববিদ্যালয় তথা সরকারের প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারের সঙ্গে করা চুক্তিতে অগ্রিম টাকা দেওয়ার কোনো নিয়ম না থাকলেও, আর্থিক সহায়তার কারণ দেখিয়ে ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে অগ্রিম বিল দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিল পরিশোধ হওয়ার আগেই ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড় করে দেওয়া হয়, যা নিয়মবহির্ভূত।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া নকশা না মেনে, সরকারি ক্রয় বিধিমালা লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। সবশেষে, দরপত্রে অস্বাভাবিক মূল্য প্রস্তাব (ফ্রন্ট লোডিং) থাকা সত্ত্বেও সরকারি ক্রয় বিধি (পিপিআর ২০০৮) অনুসারে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি বলেও মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।