ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোর দিকে ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রেখেছে ইরান!

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১৯ জুন ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোর দিকে ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রেখেছে ইরান!

ছ‌বি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নিচ্ছে। ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার আঁচ লেগেছে যুক্তরাষ্ট্রেও। ইরান হুশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়ে তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোই হবে পাল্টা হামলার প্রধান লক্ষ্য।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ইরান ইতিমধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন শুরু করেছে। বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন সামরিক ঘাঁটির দিকে তাক করে রাখা হয়েছে এসব অস্ত্র।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে। এর বড় অংশ অবস্থান করছে সৌদি আরব, জর্ডান ও আমিরাতে। এমন পরিস্থিতিতে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে আবারও বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা শুরু করতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তেহরানের ওপর চাপ প্রয়োগ করে কিছু আদায় করা যাবে না। তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হলে এর দায় থাকবে ইসরাইল ও তাদের মিত্রদের ওপর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরাইল এককভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করতে পারবে না। ফোরদো অঞ্চলে পাহাড়ের নিচে অবস্থিত গোপন ইউরেনিয়াম মজুদের জায়গাগুলোতে আঘাত হানতে হলে প্রয়োজন হবে অত্যাধুনিক বিটু স্টেলথ বোমারু বিমানের। তবে এ ধরনের হামলা মানেই পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ।

ইরান আগেই সতর্ক করেছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের হয়ে হামলায় অংশ নেয়, তবে ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা হামলা হবে। এমনকি যেসব আরব দেশ ইসরাইলকে সহযোগিতা করবে, তাদের সামরিক ঘাঁটিও ইরানের টার্গেট হবে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি হরমুজ প্রণালীতে নৌমাইন স্থাপন করে, তবে পারস্য উপসাগরে মোতায়েন মার্কিন রণতরীগুলো কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। এতে বিশ্ব বাণিজ্যপথে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জর্ডানে হুথিদের এক ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হন। বিভিন্ন সময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও বাণিজ্যিক জাহাজও এই গোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ইরান এখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে একবার সিদ্ধান্ত নিলে এক বছরের মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ অস্ত্র তৈরি করতে পারবে তারা।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠছে—যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেবে? যদিও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ ছাড়া কোনো পথ নেই, তবে এখনো মার্কিন কৌশলে দ্বিধা স্পষ্ট।

ডিফেন্স প্রায়রিটিস থিংক ট্যাঙ্ক–এর বিশেষজ্ঞ রোজমেরি কেলানী সতর্ক করে বলেছেন, ইসরাইলের হামলা ইরানকে আরও দ্রুত পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে ঠেলে দিতে পারে। আর যদি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়, তবে সেই ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যাবে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/4bC3D1_YS_k?si=HmAEjrIPhQ5K4I76

এম.কে.

×