
নিহত একই পরিবারের তিনজন। ছবি: সংগৃহীত
ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহত হয়েছেন পন্টুনে থাকা ৫ যাত্রী। এরমধ্যে একই পরিবারের তিনজন। সপরিবারে নিহত তিনজনের একজন মুক্তা বেগম। মুক্তার লাশকে গননা করা হয়েছে ‘একজন’। তবে তার মধ্যে ছিলো আরো একটি প্রাণ। তিনি ছিলেন সাত মাসের গর্ভবতী।
সদরঘাট ট্র্যাজেডিতে নিহতরা হলেন- মো. বেলাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬) ও তাদের শিশু মাইসা (৩)। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। নিহত অন্য দুজন হলেন- ঠাকুরগাঁওয়ের রবিউল (১৯) ও পটুয়াখালীর রিপন হাওলাদার (৩৮)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে কথা হলে বেলালের ভায়রা জহিরুল ইসলাম রাজু জানান, পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল ছিলেন মুক্তার স্বামী বেলাল। তার বাবা নেই। পোশাক কারখানার স্বল্প বেতনের কর্মী ছিলেন বেলাল। পরিবার নিয়ে থাকতেন গাজীপুরে।
বেলাল-মুক্তা দম্পতির সংগ্রামী জীবনে স্বাবলম্বী হতে চাকরির পাশাপাশি স্ত্রীকে নিয়ে ব্যবসায়ও শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ায় ব্যবসা আপাতত বন্ধ রেখে স্ত্রীকে গ্রামে রেখে আসতে চেয়েছিলেন বেলাল। তাই ভিড় এড়িয়ে রওয়ানা করেছিলেন ঈদের দিন।
রাজু বলেন, বেলাল গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। গার্মেন্টসের টাইম কিপিং বিভাগে কাজ করতেন। ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো বেতন পেতেন। সাড়ে ৪ হাজার টাকার বাসায় থাকা বেলালের জীবনটা সংগ্রামের ছিল। মেয়ে মাইশাকে এখনো স্কুলে ভর্তি করাননি। একটা মেয়ে বলে মেয়েটাকে অনেক আদর করতেন বেলাল।
বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে এমভি তাশরিফ-৪ দড়ি দিয়ে সদরঘাট পন্টুনে বাঁধা ছিল। এসময় এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি পার্কিং করার জন্য ঐ দুই লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ঢুকলে ধাক্কা লেগে এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চটির বেঁধে রাখার দড়ি ছিঁড়ে যায়। এতে পন্টুনে থাকা পাঁচ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
শহিদ