ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

কীভাবে ট্রেনে আগুন দেওয়া হলো জানালেন যুবদল নেতা

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ৬ জানুয়ারি ২০২৪; আপডেট: ১৬:৪৬, ৬ জানুয়ারি ২০২৪

কীভাবে ট্রেনে আগুন দেওয়া হলো জানালেন যুবদল নেতা

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য কাজী মোহাম্মদ মনসুর আলম।

বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি পুরোটাই পরিকল্পিত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যুবদলের এক নেতা। তিনি হচ্ছেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য কাজী মোহাম্মদ মনসুর আলম। শনিবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর তিনি জানিয়েছেন, বিএনপি নেতাদের উপস্থিতিতে ভার্চুয়াল একটি বৈঠকের মাধ্যমে ট্রেনে নাশকতার ওই ঘটনার পরিকল্পনা করা হয়।

আরও পড়ুন : লালমোহনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি মিটিংটি অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায়। ১৭ মিনিটের এই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়।সংবাদ সম্মেলনজিজ্ঞাসাবাদে যুবদল নেতা কাজী মনসুর ডিবিকে জানায়, তারা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। ভার্চুয়ালি এই মিটিং এ দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ করার জন্য, যাতে করে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসে।বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরাদ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। এ সময় মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে পারবে কে। তখন মিটিংয়ে উপস্থিত একজন রাজি হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে।

মনসুর পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে আরও বলেন, মিটিংয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে আসা কোনো ট্রেন ঢাকায় ঢোকার পর কিংবা নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। তখন রবিউল ইসলাম মিটিংয়ে একজনকে দায়িত্ব দেয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য।বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনশনিবার (৬ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।

তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন।

ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও যুবদল নেতা কাজী মনসুরসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ট্রেনের আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন। ৮ জন দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এসআর

×