ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর খুনি

নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে মামলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদালতে   

প্রকাশিত: ২১:২০, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে মামলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদালতে   

সংবাদ সম্মেলনে ‘সংগ্রাম’ কমিটি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা নাম পরিচয় গোপন রেখে আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে চেহারা অনেকটাই বদলে নেয়ায় তাদের সহজে চেনা যাচ্ছে না। তবে প্রবাসীদের একটি সংগঠনের সক্রিয় কর্মীরা বিভিন্ন দেশে থেকে এই খুনিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। ঘৃণ্য অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।  

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে জহুরা স্কয়ার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ‘বঙ্গবন্ধুর খুনি পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম কমিটি’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক খান লিটন। জার্মান প্রবাসী এই এক্টিভিস্ট বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। একই রাতে নারী ও শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ এই হত্যাকান্ডকে সমর্থন করতে পারে না। তার পরও ওইসব দেশেই এখন বসবাস করছে পঁচাত্তরের ঘাতকরা। নাম পরিচয় গোপন রেখে আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে চেহারা ছবিও অনেকটা বদলে নিয়েছে। তাদের সহজে চেনা যাচ্ছে না। তবে, আমাদের সংগঠনের সক্রিয় কর্মীরা বিভিন্ন দেশে থেকে এই খুনিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। 

খান লিটন বলেন, আগস্ট হত্যাকান্ডের নিষ্ঠুর ঘাতক নূর চৌধুরীর অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে এসেছে। আরেক খুনি রাশেদ চৌধুরী আছে আমেরিকায়। দু’জনের অবস্থান ও গতিবিধি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। 

সাম্প্রতিক সময়ের একটি তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গত জুন মাসে বঙ্গবন্ধুর এক খুনী জার্মানিতে এসেছিল। একই সময় একটি স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দলের দুই সদস্য এসেছিল ঢাকা থেকে। তারা সেখানে গোপন মিটিং করেছে। ওই মিটিংয়ের ভিডিও ফুটেজও তাদের কাছে আছে বলে জানান তিনি। 

খান লিটন বলেন, সরকার খুনিদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে এবং দেশে ফিরিয়ে আনতে বহু বছর ধরে কাজ করছে। তবে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা সাধারণ বাঙালি এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। সরকারকে আমরা এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি। আরও করবো। বিশেষ করে নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা করা হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অনেক দেশ এইসব খুনিদের ব্যাপারে তেমন কিছুই জানে না। তাদেরকে জানাতে হবে আগে। সে লক্ষ্যে প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশে থেকে কাজ করছেন। আন্তর্জাতিকভাবে জনমত গঠনে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে খুনিদের ব্যাপারে সব জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। 

সরকারের কাছ থেকেও কিছু সহায়তা চান সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বর্তমান সময়ের ছবি দেশে বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। এ কাজটি সরকার করতে পারে। এটি হলে প্রবাসী বাঙালিরা তো বটেই, বিদেশীরাও মুজিবের খুনিদের চিনতে ভুল করবে না। ধরা সহজ হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে খান লিটন বলেন, ইউরোপ আমেরিকা কানাডাসহ বহু দেশে আমাদের সংগঠনের কর্মীরা সক্রিয় রয়েছেন। তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করছেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কারও নাম পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।     
       
সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শেখ কামালের বন্ধু একে এম নাসির উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন কাতার বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম কিবরিয়া, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হোসনে আরা এবং সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী মোল্লা লিংকন।  
 

 

এস 

×