ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তবে চট্টগ্রামে নানা সমস্যায় জর্জর বিভিন্ন কারখানা

তৈরি পোশাকের বিদেশী অর্ডার মিলছে আশাব্যঞ্জক হারে

মোয়াজ্জেমুল হক

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ১৮ অক্টোবর ২০২২

তৈরি পোশাকের বিদেশী অর্ডার মিলছে আশাব্যঞ্জক হারে

পোশাক শিল্পে বিদেশিদের অর্ডার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে

করোনার ধকল অনেকাংশে পুরোপুরিভাবে কাটিয়ে ওঠার পর পোশাক শিল্পে বিদেশিদের অর্ডার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামীতে জাতীয় পর্যায়ে পোশাক শিল্প থেকে রপ্তানিতে আগের মতো দাপট সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশ থেকে রপ্তানি প্রক্রিয়ায় একসময় তৈরি পোশাক শিল্পই ছিল সর্বাগ্রে। কিন্তু দিন যতই গড়িয়েছে সেটি ধীরে ধীরে কমেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবছরে রপ্তানি প্রক্রিয়ায় তৈরি পোশাক শিল্পের পরিমাণ ছিল ৮১ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয়ভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানির হিস্যা কমলেও অন্য সবদিক থেকে রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। করোনা মহামারীর সময় পোশাক শিল্পে সংকট তৈরি হলেও এখন আগের মতো পুরোদমে কাজ চলছে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক বেশি হারে অর্ডার মিলছে।
বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জাতীয় পর্যায়ের রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের পরিমাণ ছিল ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ। তিনবছরের ব্যবধানে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি ১১ বিলিয়ন ডলার বা ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময়ে সব ধরনের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বাড়লেও তৈরি পোশাকের পরিমাণ কমেছে প্রায় আড়াই শতাংশ।
সূত্র জানায়, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর দেশের তৈরি পোশাক খাত নিশ্চিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। করোনায় চলতি অর্থবছরের শুরুতে গত জুলাই মাসে যেখানে বিদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মকে চলে যায় সেখানে ছয় মাস পূর্ণ না হতেই গত ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। পাশাপাশি অর্ডারও আসছে আশাব্যঞ্জক হারে।
সূত্র জানায়, দেশের সামগ্রিক তৈরি পোশাক খাতে যখন এই অবস্থা তখন নানা সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। বিজিএমই সূত্র জানায়, নতুন বিনিয়োগে ব্যাংকের অসহযোগিতাসহ দক্ষ শ্রমিক স্বল্পতার কারণে চট্টগ্রামের পোশাক শিল্পগুলো রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে দেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ৩৯ শতাংশ হতো চট্টগ্রাম থেকে। সেখানে ৩৫ বছর পর ২০২১ সালে সেটি নেমে এসেছে ১৫ শতাংশে।
গত তিন দশক ধরে জাতীয় রপ্তানিতে চট্টগ্রামের হিস্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে বলে জানিয়েছেন পোশাক শিল্পের মালিকদের বিভিন্ন সূত্র। তাদের মতে, চট্টগ্রামে সমুদ্র বন্দরসহ রপ্তানির অবকাঠামোগত সকল সুযোগ সুবিধা থাকার পরও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগে দীর্ঘসূত্রতা, ক্রেতাদের কমপ্লাইয়েন্সের বাধ্যবাধকতা, নতুন বিনিয়োগে ব্যাংকের অসহযোগিতা, দক্ষ শ্রমিক স্বল্পতা, বায়িং হাউসের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি এবং গার্মেন্টস পল্লি গড়ে না ওঠাসহ ইত্যাদি কারণে চট্টগ্রাম থেকে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি ক্রমাগত কমেছে।

×