
ছবি: সংগৃহীত
দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দর। ১৮৮৮ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ‘চিটাগাং পোর্ট কমিশনারস অ্যাক্ট’ গঠনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে এই সমুদ্র বন্দর। সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে এটি দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বার্ষিক ১২৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশই পরিচালিত হয় এই বন্দরের মাধ্যমে।
তবে এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের কার্যক্রম এখনো অনেকাংশেই পুরনো ধাঁচে পরিচালিত হচ্ছে। বন্দরের অভ্যন্তরে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত, যা কার্যকারিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনো দেখা যায়, কন্টেইনার থেকে পণ্য খালাসের জন্য হাতগাড়ি বা ঠেলাগাড়ির মতো প্রাচীন উপকরণ ব্যবহার হচ্ছে। ট্রাকে পণ্য লোড দেওয়ার কাজেও নেই স্বয়ংক্রিয় কোনো ব্যবস্থা।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত বন্দর ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব নয়। স্ক্যানার মেশিন, আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম এবং স্বয়ংক্রিয় লজিস্টিকস ব্যবস্থা সংযোজন করা না হলে বন্দরের কার্যক্রম যেমন ধীরগতির থাকবে, তেমনি অপারেটিং খরচও বাড়তে থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পরে কাল বুধবার (১৪ মে) প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফরে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি পরিদর্শন করবেন চট্টগ্রাম বন্দর এবং মতবিনিময় করবেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ধারণা করা হচ্ছে, তার এই সফরের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে পারে।
ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত এবং উচ্চমানের নেটওয়ার্কসম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে ড. ইউনূসের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিযোগিতামূলকতা যেমন বাড়বে, তেমনি দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য খরচও কমে আসবে।
এ সফরেই প্রধান উপদেষ্টা ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন কর্ণফুলী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত কালুরঘাট সেতুর, যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। এই সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লক্ষ লক্ষ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের আশা, সেতুটি যথাসময়ে নির্মাণ সম্পন্ন হবে এবং এর কার্যক্রমে কোনো ধরনের জটিলতা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নজরদারিও বজায় থাকবে।
সফরের শেষ পর্যায়ে ড. ইউনূস যোগ দেবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে, যেখানে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করবেন।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=2zTGeuHP_Pc
রাকিব