ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১

তীব্র প্রতিবাদ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের

নূরের সংগঠনের উগ্র সাম্প্রদায়িক তৎপরতা

প্রকাশিত: ১৮:০৪, ১৩ মার্চ ২০২১

নূরের সংগঠনের উগ্র সাম্প্রদায়িক তৎপরতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াতের ভারত বিরোধী সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পথ ধরেছে সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, রাশেদ ও ফারুকদের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ। ধর্ষণ, অর্থ লোপাটের নানা অভিযোগের পর এবার নূর-রাশেদ গ্রুপের নেতাদের হিন্দু ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে অশ্লিল ও সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রচারের ঘটনায় তোলপার শুরু হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক তারেক রহমানের সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনায় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন সংগঠনের অপর অংশ বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। অবিলম্বে তারেককে আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। জানা গেছে, পার্শবর্তী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করতে গিয়ে নূরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক তারেক রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে অশ্লিল ও সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর ছাত্র সংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গনে সক্রিয় প্রগতিশীলদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার নিমিত্তে তারেক রহমানকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। নূর ও তার সহযোগীদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে বেড়িয়ে যাওয়া সংগঠনের অপর অংশ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক এপিএম সুহেল ও সদস্য সচিব ইসমাইল সম্রাট এক প্রতিবাদ লিপিতে বলেছেন, ‘মোঃ তারেক রহমানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা স্পষ্টতই ধর্মীয় অবমাননা ও বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বিনষ্টের একটি অপচেষ্টা বলে আমরা মনে করি। ভিডিও বার্তায় তিনি যা বলেছেন তা খুবই নোংরা এবং অশ্লীল কথাবার্তায় পরিপূর্ণ। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোকে 'চটিগ্রন্থ' বলে উল্লেখ করেছেন তিনি এবং সেগুলোর কাহিনীকে অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করেছেন’। সুহেল ও সম্্রাট আরো প্রতিবাদ লিপিতে আরো বলেছেন, ‘পাশ্ববর্তী দেশ 'ভারতের ধর্মগ্রন্থ' বলতে সেখানে বসবাসরত সকল জাতির সকল ধর্মগ্রন্থগুলোকেই বোঝায়। ভারতে শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মানুভুতির মানুষজনই বসবাস করেন না। সেখানে মুসলমান, খ্রীষ্টান,বৌদ্ধসহ অন্যান্য অনেক ধর্মের মানুষের বসবাস। তার এই বক্তব্য অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেতনার পরিপন্থী। এরও আগে ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর সম্পাদক তিথি সরকারও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্টে’। প্রতিটি ধর্মগ্রন্থই ঐ ধর্মের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটা নিয়ে হাসি-তামাশা কিংবা নোংরা কথা বলার অধিকার কোন ধর্মগ্রন্থই কাউকে দেয় নাই’। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ অবিলম্বে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়ে বলেছে, ‘ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবমুখর পরিবেশে জনাব তারেকের এই বক্তব্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে দেশি বিদেশি ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা মনে করি। আমরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার নিমিত্তে তাকে আইনেরাওতায় আনারও জোর দাবি জানাই, যেন অদূর ভবিষ্যতে কেউ কোন ধর্মগ্রন্থ নিয়ে এইরকম দুঃসাহসিক হীন কাজ করার সাহস না পায়’। জানা গেছে, এর আগেও নূর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক তৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অব্যাহতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও মানহানিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগে নূর ও তার সঙ্গী রাশেদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও হয়েছে। মামলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানহানিকর তথ্য পড্রকাশের অভিযোগ আনা হয়।
×