ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

মানবপাচার প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ৩১ জুলাই ২০২০

মানবপাচার প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক ॥ মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে ফোর-পি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মানবপাচার রোধে বহুমাত্রিকতার প্রেক্ষাপটে ‘প্রিভেনশন’, ‘প্রমোশন,’ ‘প্রটেকশন,’ ও ‘পার্টনারশিপ’ -এ ফোর-পি ধারণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, আইনি সম্প্রদায়, সুশীল সমাজ, এনজিও এবং বিশেষ করে স্থানীয় কমিউনিটিসহ সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তা তুলে ধরেন তিনি। মানবপাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাপকভিত্তিক যেসব আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসবও উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। এ ঘৃণ্য অপরাধ প্রতিরোধে যারা সামনের সারিতে থেকে কাজ করছেন এবং যারা সর্বপ্রথম সাড়া দিচ্ছেন বিশেষ করে এ বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে, তাদের তাৎপর্যপূর্ণ এ অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। মানবপাচার বিরোধী গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডস এবং জাতিসংঘের ড্রাগস ও ক্রাইম বিষয়ক কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) এর যৌথ উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডসের সদস্য। মানবপাচারের আন্তঃসীমান্ত ও আন্তঃদেশীয় প্রকৃতি ও ব্যাপ্তিকে আমলে নিয়ে স্থানীয়, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রদূত। মানবপাচার বিষয়টি সামগ্রিকভাবে দেখা এবং এর মূল কারণগুলো চিহ্নিত করাসহ এ সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। এগুলো হলো- দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রম এবং সহযোগিতাসমূহ জোরদার; সংশ্লিষ্ট জাতীয় আইনসমূহ কার্যকর; ইনটেলিজেন্স ও তথ্য বিনিময় ব্যবস্থার উন্নয়ন; মানবপাচার সংশ্লিষ্ট অপরাধ প্রতিরোধ ও মনিটরিংয়ের জন্য ডিজিটাল সার্ভিলেন্স ও আইসিটির ব্যবহার এবং এতদবিষয়ে সক্ষমতা বিনির্মাণ। মানব পাচার বিষয়ে আইওএম, ইউএনওডিসি ও ইন্টারপোলসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়মিত অভিবাসনের ইতিবাচক দিকগুলোর কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, মানবপাচারের নেতিবাচক প্রভাব রুখতে এটি হতে পারে টেকসই বিকল্প। মানবপাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত প্রটোকল ও আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রয়োগ নিশ্চিতে আরও জোর প্রচেষ্টার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। ইভেন্টটির মডারেটর ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বেলারুশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি মানবপাচার বিরোধী গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডস জোটের পক্ষে বক্তব্য দেন। প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন ইউএনওডিসির নির্বাহী পরিচালক, যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার প্রতিরোধ ও মনিটরিং বিষয়ক অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এবং বলিভিয়া, বেলজিয়াম ও মিশরের স্থায়ী প্রতিনিধিরা। এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে বক্তব্য দেন ইউএন উইমেনের উপ-নির্বাহী পরিচালক এবং ইউএনওডিসি’র গ্লোবাল ফ্লাইট এগেইনিস্ট হিউম্যান ট্রাফিকিং বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত। জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের এ ইভেন্টটিতে সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধি এবং এনজিও ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটিতে মানবপাচারের শিকার একজন নারী তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। এ ধরনের ভার্চুয়াল ইভেন্টে বিপুল সংখ্যক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির অংশগ্রহণ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বক্তারা কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও উত্তরণ প্রচেষ্টায় মানবপাচার প্রতিরোধ বিষয়টিকে সন্নিবেশনের আহ্বান জানান এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে আরও অধিক সমন্বয় ও ব্যাপকভিত্তিক প্রচেষ্টা গ্রহণের ওপর জোর দেন।
×