ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২ চৈত্র ১৪২৯

monarchmart
monarchmart

সিলেটীদের লন্ডন আসক্তি থমকে গেছে;###;আগের ৭০ ভাগের তুলনায় এখন ১০ ভাগও ভিসা মিলছে না ;###;ইমিগ্রেশন ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত ;###;প্রবাসীরাও এখন নানামুখী দুশ্চিন্তায়

ভিসা পেতে হিমশিম

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ভিসা পেতে হিমশিম

সালাম মশরুর ॥ ইমিগ্রেশন নীতিমালায় পরিবর্তন ও আইনের নানান মারপ্যাঁচের কারণে স্বপ্নের দেশ লন্ডন যেতে বাংলাদেশীদের এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখান থেকে ভিসা নিয়ে লন্ডন যাত্রা অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসাসহ অন্যান্য উপায়ে সাম্প্রতিককালে লন্ডন গিয়ে যারা রোজগারের চিন্তা অথবা স্থায়ী বসবাসের চেষ্টা করছেন তাদের ক্ষেত্রেও। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। ১০ শতাংশও পাওয়া যাচ্ছেনা না ভিজিট ভিসা। ব্রিটেনের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী যুবকের বাংলাদেশ থেকে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে মোটামুটি ৬ মাস সময় লাগত। সেখানে এখন বছরের পর বছর গড়িয়ে যাচ্ছে, আইনী ঝামেলা পোহাতে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। নানা প্রতিবন্ধকার কারণে লন্ডন পাড়ি জমাতে উৎসাহীরা হতাশায় ভুগছেন। প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চল দ্বিতীয় লন্ডন হিসেবে খ্যাত। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশী বিশাল জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছেন সিলেটের বাসিন্দা। সেই ব্রিটিশ শাসন আমলে যাত্রা শুরু। প্রাথমিক পর্যায়ে ভিসা প্রচলন ছিল না। প্রয়োজন হয়নি পাসপোর্টের। পর্যায়ক্রমে আইনের বাধ্যবাধকতা শুরু হয়। তবুও লন্ডন গমনকারীর যাত্রায় বিপত্তি ঘটেনি। একের হাত ধরে অপরের যাত্রা অব্যাহত থাকে। সেখানে অবস্থান নেয়া প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও নানাভাবে পরিচিতজনরা প্রবাসীদের সহযোগিতায় লন্ডন পাড়ি দিয়েছেন এবং সেখানে থাকার সুবিধা পেয়েেেছন। স্থায়ী বসবাসের অধিকারী প্রবাসী পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাবার একটি অন্যতম সুবিধা পেয়েছেন এখানকার অধিবাসীরা। প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলেমেয়ে তারপর পরিবারের অন্যান্য সদস্য লন্ডন যাবার সুবিধা পেয়েছেন। অনেকটা সহজেই এই সুবিধা পেয়েছেন বাঙালীরা। পরিবার-পরিজন এবং আত্মীয়-স্বজন বংশপরম্পরায় পাড়ি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যে। সিলেটীদের এই ব্রিটেন তথা লন্ডন আসক্তি এখন অনেকটা থমকে দাঁড়িয়েছে। দেড় বছরের অধিককাল হয়ে গেছে ইউকে ভিসা প্রসেসিং সেন্টার ঢাকা থেকে দিল্লীতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশীদের ভিসাপ্রাপ্তির হার অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আগে যেখানে ৭০ শতাংশ আবেদনকারী ভিসা পেতেন এখন সেখানে মাত্র ১০ শতাংশও ভিসা পাচ্ছেন না। তাছাড়া নানা কড়াকড়ির কারণে স্টুডেন্ট ও স্পাউজ ভিসাপ্রাপ্তিও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্র্যান্ট আসার হার একেবারেই কমে গেছে। আর এসব কারণে পূর্ব লন্ডনের অধিকাংশ বাঙালী ইমিগ্রেশন ফার্ম ব্যবসা পরিচালনায় ধস নেমেছে। ভবিষ্যতে ইমিগ্রান্টস আসার পথ সুগম না হলে অনেক ইমিগ্রেশন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইমিগ্রেশন ফার্মগুলো বিশেষ করে ভিজিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা ও স্পাউজ ভিসা প্রসেসিং নিয়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু এখন এই তিনটি খাতে কাজ নেই বললেই চলে। ২০১৪ সালের ১ অক্টোবরে ইউকে ভিসা প্রসেসিং সেন্টার ঢাকা থেকে দিল্লীতে স্থানান্তরের পর ভিসাপ্রাপ্তির হার কমে যাওয়ায় এখন আর প্রবাসীরা আত্মীয়-স্বজনকে লন্ডনে ভিজিটে আনতে স্পন্সর করতে আগ্রহী নয়। কারণ অধিকাংশ আবেদনই রিফিউজ হচ্ছে। তাছাড়া ইতোপূর্বে আপীল পদ্ধতি বাতিল করে দেয়ায় এখন আর এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। তাই তারা যে সিদ্ধান্ত দেয় সেটিই মেনে নিতে হয়। এক সময় আপীল রাইট থাকাকালে অধিকাংশ স্পনসরই আবেদনকারীর পক্ষে আপীল করতেন। তখন আদালতে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপীলের পক্ষে রায় পাওয়া যেত। ভিসা হয়ে যেত। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই। আগে ভিজিটের জন্য আবেদন প্রসেস করে দেয়ার পর রিফিউজ হলে আবার আপীলের কাজ করার সুযোগ পাওয়া যেত। এরপর ভিজিট ভিসায় ব্রিটেন আসার পর এখানে ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করা কিংবা বিদ্যমান অন্য কোন বৈধ পদ্ধতির আবেদনের জন্যও মানুষ ইমিগ্রেশন ফার্মে আসত। কিন্তু এখন একেবারে গোড়ায় কেটে দেয়া হচ্ছে। ভিজিটে আসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না, আপীল তো দূরের কথা। স্পাউজ ভিসায় ব্রিটিশ ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে বিয়ে করে স্বামী-স্ত্রীকে আনতে পারতেন। কিন্তু এখন ব্রিটেনে একজনকে নিয়ে আসতে হলে ১৮ হাজার ৬শ’ পাউন্ডের চাকরি থাকা বাধ্যতামূলক ও ইংলিশ স্কুলে এ-১ শিক্ষা অপরিহার্য করা হয়েছে। ফলে ব্রিটিশ ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশে নিয়ে বিয়ে দেয়ার প্রবণতা একেবারেই কমে গেছে। বর্তমান কঠোর নীতির কারণে লন্ডনে বসবাসকারী বাঙালী ছেলেমেয়ের বিয়ের ব্যাপারে দেশের পাত্র-পাত্রির কথা ভাবা অনেকটা ছেড়ে দিয়েছেন। এখন লন্ডনেই ছেলেমেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে নানামুখী। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলায় অভ্যস্থদের সেখানে নিজেদের পছন্দসই পাত্র-পাত্রি নির্বাচন করতে বেগ পেতে হচ্ছে। জানা গেছে, নানান কারণে সিলেট অঞ্চলে প্রবাসীদের অর্থ আসা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে প্রবাসীরা জমিজমা, মার্কেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নানান খাতে টাকা বিনিয়োগ করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। যে কারণে অন্যান্য স্থানের তুলনায় সিলেটের আশপাশে জমির অধিক মূল্য চোখে পড়ার মতো। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট এখানকার অধিবাসীই অর্থ রোজগারের সুযোগ পাচ্ছেন। প্রবাসীদের বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিকালে এক্ষেত্রে মন্দাভাব বিরাজ করছে। অন্যদিকে স্টুডেন্ট ভিসার সুযোগ এখন নেই বললেই চলে। পূর্বে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য ১৬ হাজার টাকা আবেদন ফি জমা দেয়া হয়েছে। ওই সময় থেকে ২ মাস পর্যন্ত আবেদনকারীর এ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ১২ লাখ টাকা জামানত থাকার বিধান ছিল। সে সময় লন্ডন থেকে ভিসা আবেদনকারীর পক্ষে ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান করা হলে ওই প্রার্থীকে এখানে আর টাকা জমা দিতে হতো না। সেক্ষেত্রে এখন আইনের অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ভিসার আবেদন করতে ৭৮ হাজার টাকা ফি জমা দিতে হচ্ছে। আবেদন অগ্রাহ্য হলে আবেদন ফির টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। এছাড়াও ১২ লাখের পরিবর্তে এখন ১৪লাখ টাকা জামানত ও তিন মাস সময় ব্যাংকে টাকা আছে মর্মে প্রমাণ থাকতে হবে। বিশেষ করে আবেদনকালীন বড় অঙ্কের টাকা ফি জমা দিয়ে আবেদন রিফিউজ হলে টাকা ফেরত না পাবার বিধান অধিকাংশ আবেদনকারীকে নিরুৎসাহিত করছে। এক সময় নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়েও এখান থেকে ব্রিটেন পাড়ি জমাতে পিছপা হতেন না। স্টুডেন্ট ভিসায় সেখানে বাঙালী তথা অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীর আগমনের কারণে অনেক ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ কমে গেছে। এক সময় ১৪ বছর ব্রিটেনে বসবাস করলে হিউম্যান রাইটস আইনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করা যেত, এখন তা করা হয়েছে ২০ বছর। হোম অফিসের যে কোন আবেদনের ক্ষেত্রে মূল ফি ৬৪৯ পাউন্ডের সঙ্গে হেলথ ফি বাবদ আরও ৫শ’ পাউন্ড ধার্য করায় অনেকের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো অবস্থা হয়েছে। অনেকেই বেশি ফির কারণে আবেদন করতে সাহস পান না। কারণ, একটি আবেদনে হোম অফিস ফি, হেলথ ফি ও সলিসিটর ফিসহ প্রায় ২ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হয়। অথচ সফল হওয়ার নিশ্চয়তা থাকে একেবারে কম। এদিকে ইমিগ্র্যান্ট আসা বন্ধ হয়ে পড়ায় অনেক ইমিগ্রেশন ফার্ম নানা ধরনের বেআইনী কাজে জড়িয়ে পড়েছে। হোয়াইটচ্যাপেল এলাকায় এমন অনেক ফার্ম রয়েছে যাদের সলিসিটর রেগুলেটরি অথরিটি (এসআরএ) একাধিকবার ব্ল্যাকলিস্ট করেছে। কিন্তু প্রতিবারই তারা ভিন্ন সলিসিটরের অধীনে ভিন্ন নামে কোম্পানি খুলে কাজ করে যাচ্ছে। তারা নানাভাব প্রতারণা করে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। অবৈধভাবে বসবাসরত অসহায় ইমিগ্র্যান্টদের লিগ্যাল করে দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের অর্থ আত্মসাত করে তারা অনায়াসে পার পেয়ে যায়। ব্রিটেনে কনজারভেটিভ সরকার এককভাবে ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো স্টুডেন্ট ভিসায় ব্যাপক পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর পরিবর্তিত নিয়মে বাংলাদেশীসহ নন-ইউরোপীয় স্টুডেন্ট ভিসায় কাজের সুযোগ না থাকার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভিসার মেয়াদ পুনরায় বাড়াতে নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। এছাড়া বন্ধ হয়ে যাবে ব্রিটেনে স্থায়ী হবার সুযোগও। উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দ ব্রিটেন। তবে, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের নতুন ইমিগ্রেশন নীতিমালায় দিন দিন কঠোর হচ্ছে ব্রিটেনে পড়ালেখার সুযোগ। যারা ইতোমধ্যে ব্রিটেনে আছেন তারাও রয়েছেন নানামুখী দুশ্চিন্তায়। পূর্বে পড়ালেখার পাশাপাশি কাজের সুযোগ থাকলেও এখন আর তা থাকছে না, লেখাপড়া শেষে ফেরত যেতে হবে নিজ দেশে। ইমিগ্রেশন নীতিমালা পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার্থে ব্রিটেনে যাওয়ার হার কমে গেছে। সরকারের নতুন কঠোর ইমিগ্রেশন আইনের নীতিমালার কারণে ব্রিটেনে পড়তে আসা নন-ইউরোপীয়সহ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন। বহিরাগতদের কারণে স্থায়ী বাসিন্দার রোজগার কমে গেছে। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে সরকার। সে সঙ্গে বেকার, বয়স্কভাতাসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমানোর দিকটাও বিবেচনা করে ইমিগ্রেশন আইনের এই কঠোরতা আরোপ করা হচ্ছে বলেই সংশ্লিষ্টরা বলছেন। লন্ডন প্রবাসী ব্যবসায়ী জালাল আহমদ জনকণ্ঠকে জানান, ইমিগ্রেশন আইনের এমন কড়াকড়িতে ব্রিটিশদের সমর্থন রয়েছে। দেশ অধিক জনসংখ্যার চাপ থেকে রক্ষা পাবে। রোজগার বৃদ্ধি পাবে। এতে তাদের ভাল হবে। ব্রিটেনে আবারও নতুনভাবে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। তবে এই সিদ্ধান্তে সকলের আশা পূরণের মতো যথেষ্ট কারণ নেই। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যারা ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তাদের বার্ষিক ৩৫ হাজার পাউন্ড আয় দেখাতে হবে। শুধু তাই নয়, এখন থেকে ৫ বছর ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজ করার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনের যোগ্য হবেন। এই বছরের মধ্যভাগে এই নিয়ম চালুর কথা রয়েছে। পূর্বে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় এসে ৫ বছর থাকার পরই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করার সুযোগ ছিল। ২০১০ সালে এ সুবিধা সংকুচিত হয়ে যায়। নতুন করে আবার ২০১৬ সাল থেকে এই নিয়ম চালু করা হচ্ছে। নতুন নিয়মে এবার ৫ বছর বসবাসের পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে বছরে ৩৫ হাজার পাউন্ড আয় দেখানো একটি কষ্টসাধ্য বিষয়। এ নিয়মে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ব্রিটেনে যাওয়ার সুযোগ বাড়লেও স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ কমে যাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভুক্ত দেশের বাইরে অন্য দেশ থেকে লেখাপড়ার জন্য যুক্তরাজ্যে আসা শিক্ষার্থীর কাজের সুযোগ রহিত করা হবে। কোর্স শেষ হওয়ামাত্র এসব শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরত যেতে হবে এবং একনাগাড়ে দুই বছরের বেশি সময়ের জন্য ভিসা দেয়া হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে কর্মসংস্থান খোঁজার সুযোগ বন্ধ করতে শিক্ষার্থী ভিসায় আরও কড়াকড়ি আনতে সরকার নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকার যুক্তরাজ্যের মোট অভিবাসীর সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত সরকারী এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর সময়ে ইইউর বাইরের দেশ থেকে এক লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন। ওই সময়ে যুক্তরাজ্য ছেড়ে গেছেন মাত্র ৫১ হাজার শিক্ষার্থী। ফলে শুধু শিক্ষার্থী ভিসার কারণে ওই বছর অভিবাসীর সংখ্যা ৭০ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন তথ্যের পরই নতুন পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়। বর্তমান আইন অনুযায়ী বৈধভাবে একনাগাড়ে কেউ ১০ বছর যুক্তরাজ্যে বসবাস করলে স্থায়ীভাবে বাসের সুযোগ পান। এই পথ বন্ধ করতে ডেভিড ক্যামেরনের সরকার গত মেয়াদেই শিক্ষার্থী ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ আট বছর এবং কর্মজীবী ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ছয় বছর নির্ধারণ করে। এমন কড়াকড়ির পরও শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী ভিসা মিলে ১০ বছর পূর্ণ করে স্থায়ী বাসের সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ এতদিন ছিল। সরকারের নতুন পরিকল্পনায় এই সুযোগ বন্ধ করার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কোর্স শেষ করা মাত্রই দেশে ফিরে যেতে হবে। দেশ থেকেই তাদের কর্ম ভিসার (ওয়ার্ক পারমিট) জন্য আবেদন করতে হবে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইউনিভার্সিটিতে বিদেশী শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পান। নতুন নিয়ম চালুর কারণে সেই সুযোগ আর থাকছে না। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন সুপারমার্কেট এবং ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিশেষ করে বাঙালীদের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টে বিদেশী শিক্ষার্থীদের খন্ডকালীন কাজের সুযোগ ছিল। এতে শিক্ষার্থীর যেমনি একটি আয়ের পথ উন্মুক্ত ছিল তেমনি এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও এই কর্মীদের ওপর ছিল বেশ নির্ভরশীল। এছাড়াও প্রিন্টিং, বিজ্ঞাপন, ফটোগ্রাফি, ডিজাইনসহ বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করার সুযোগ গ্রহণ করছে ছেলেরা। শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ রহিত করার সরকারী এমন নীতিমালায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এসব ব্যবসায়ী। অপরদিকে কড়াকড়ির কারণে যুক্তরাজ্যে বিদেশী শিক্ষার্থীর আগমন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
monarchmart
monarchmart

শীর্ষ সংবাদ:

দেশে কোনো পণ্য সংকটের শঙ্কা নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
পাকিস্তানের ভাবধারায় উজ্জীবিত বিএনপি:ওবায়দুল কাদের
পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের দোসর ছিলো জিয়া :ড. হাছান মাহমুদ
স্বাধীনতা দিবসে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
চোখে মুখে একটাই স্বপ্নছিল দেশটাকে স্বাধীন করা : শিক্ষামন্ত্রী
গুগল ডুডলে স্বাধীনতা দিবস
দেশে এখন স্বাধীনতা-গণতন্ত্র নেই :মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা বিরোধিতা করেছে তারাই এখন ক্ষমতায় যেতে মরিয়া :জাহিদ মালেক
গুলিস্তান বিস্ফোরণে ১৯ দিন পর আরও একজনের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে নিহত বেড়ে ২৬
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা
রমজান মাসে একবারের বেশি ওমরাহ করা যাবে না
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবে নিহত ১৯
পশ্চিমা মিত্ররা আরও অস্ত্র না পাঠালে রাশিয়ায় পাল্টা হামলা করা যাবে না :প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি