মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহী অঞ্চলের পশুহাটগুলোয় গরু আমদানি শুরু হয়েছে। এখনো জোরেশোরে কেনাবেচা শুরু না হলেও এবার দেশী গরুর আধিক্য হাটে হাটে। রাজশাহীর সীমান্ত দিয়ে সীমিত ভারতীয় গরু এলেও হাটের ব্যবসায়ীরা বলছেন ভারতীয় গরুর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। হাট ইজারাদারদের দাবি, সীমান্তের ওপারে কড়াকড়ির কারণে এবার কোরবানির পশু আসছে না। ফলে এখনো হাট জমে উঠতে শুরু করলেও কেনাবেচা জমেনি।
সীমান্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভারত সরকারের কড়াকড়ির কারণে মাঝে একেবারে বন্ধ ছিল রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু-মহিষ আমদানি। তবে কিছুদিন ধরে রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গরুর পাশাপাশি মহিষও আসছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে কোরবানির পশুর সঙ্কট হবে না বলে মনে করছেন গরু-মহিষ ব্যবসায়ীরা। রাজশাহী সীমান্তে তুলনামূলক কম গরু প্রবেশ করলেও সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে শিবগঞ্জের ওয়াহেদপুর, জোহরপুর, ফতেপুর, রঘুনাথপুর ও মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিন আগেও ভারতের কড়াকড়ির কারণে গরু আসা বন্ধ ছিল। তবে এখন আবার আসা শুরু হয়েছে।
রাজশাহী কাস্টমস কমিশনারের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভারতে কড়াকড়ির পরেও দেশে গরু আসছে। জুলাই মাসে ভারত থেকে আসা প্রায় ৩৪ হাজার গরু ও মহিষের করিডর করা হয়েছে। আর আগস্ট মাসে প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার গরু ও মহিষ করিডর করা হয়েছে। চলতি মাসে আরও গরু প্রবেশের আশা রয়েছে।
তবে উত্তরাঞ্চলের পশুর সবচেয়ে বড় হাট রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, ভারতীয় গরুর আমদানি নেই। তিনি জানান, সিটিহাট সপ্তাহে দু’দিন বসে। তবে ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। হাট চলছে দেশী গরুতে। দেশী গরুর আধিক্য থাকলেও ভারতীয় গরু না থাকার কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কোরবানির জন্য এখন খামারের গরুগুলোই হাটে দেখা যাচ্ছে। এগুলো আকাশচুম্বী দামের কারণে পাইকাররা ব্যবসা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রাজশাহী ৩৭ ব্যাটেলিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর এইচ কামরুল হাসান জানান, মূলত ২০১০ সালের পর থেকেই এ অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে গরু-মহিষ আসা কমেছে। তবে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। এখনও সীমিতভাবে আসছে।
গরু ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলের বিভিন্ন হাটে ভারতীয় গরু-মহিষের আমদানি বেড়েছে। তবে বেশিরভাগ ভারতীয় গরু-মহিষ আসছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার রাজশাহীর পশুহাটে গরুর দামও বেড়ে গেছে। এরইমধ্যে হাট জমতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে হাটের বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠবে। ব্যবসায়ীরা বলেন, ঈদের আগে ভারতীয় গরু আমদানির পরিমাণ না বাড়লে এবার কোরবানির পশু কেনাবেচায় আধিক্য থাকবে দেশী গরুর। এক্ষেত্রে দাম গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি থাকবে। তারপরে এবারও কোরবানির হাটে ভাল কেনাবেচার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে জেলার উপজেলা পর্যায়ের হাটও জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির গরুতে। এসব হাটে এবার ভারতীয় গরুর চাহিদা থাকলেও দেশী গরুর আমদানি বেশি হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত লাভের আশায় রয়েছেন দেশীয় গরুর খামারিরা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: