ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রঙ তুলি এখন বিলুপ্তির পথে!

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০:২২, ১০ মার্চ ২০২৫

রঙ তুলি এখন বিলুপ্তির পথে!

ছবি:সংগৃহীত

একসময় শহর-গ্রামে দেখা যেতো কতই না রঙ বে-রঙের চিত্র, দৃশ্য, হাতে আঁকা ছবি, কার্টুন, মজার মজার চিত্র। হাতে লেখা রং তুলিতে চিত্র-চারু শিল্পীদের আঁকা-বাঁকা কারুকাজ, হাতের লেখা কাপড়ের ব্যানার, পেস্টুন, ছবি, তোরন, দেয়ালে দেয়ালে ছবি, গাছের ডালে পোস্টার, ব্যানার, ছবি আকাঁ চিত্র।

 

 

তবে এখন আর দেখা মিলছে না সেসব হাতের আকাঁ রঙ তুলির চিত্র, ব্যানার, ফেস্টুন, আঁকা-বাঁকা ছবি। প্রযুক্তির ভীড়ে হারিয়ে গেছে হাতে লেখা চিত্র-চারু শিল্পীরা। রং তুলি এখন বিলুপ্তির পথে! 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের আরএস  ডিজিটাল সাইন এর স্বত্ত্বাধিকারি কামাল জানান, তার বয়স যখন ১২-১৩ তখন হাতে তুলে নেওয়া রং তুলি ছিল কর্মসংস্থানের বড় সাফল্য। দোকানের নাম ছিল 'কামাল আর্ট'।

 

 

রাজনীতির ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড, বিলবোর্ড সবই হাতে রং তুলি দিয়ে আঁকতে হতো। মানুষের লাইন পড়ে যেত কাজ শেষ করতে পারতাম না। তখন পুঁজি ছিল রং, তুলি, সুতা, কাপড় আর নিজের বুদ্ধি। কম টাকায় বেশি পরিশ্রমে বেশি আয় হতো। এখন প্রযুক্তির যুগ চালু হয়েছে। যুগের তালে পুঁজি বেশি খাটাতে হয়। প্রযুক্তির ব্যবহারে লাখ টাকার মেশিন কিনতে হয়। হাতে লেখা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড রং তুলি দিয়ে আঁকতে সময় লাগে। মানুষ এখন দেরি করতে চায় না। তারা দ্রুত সময়ে কাজ করতে চায়। 

 

 

 

সেতু আর্টের স্বত্ত্বাধিকারি শতদল সাহা জানান, এক সময়ে প্রচুর আর্টের কাস্টোমার ছিল। আর্টের কাজ করতে করতে রাত পোহাত, তারপরও কাজ শেষ হতো না। এখন কাজ নেই। রং তুলির কাজ শিখতে অনেক বছর সময় লেগেছে। এখন হাতে লেখা রং তুলির কাজ কেউ করাতে চায় না। জীবনের গতি ঠিক রাখতে রং তুলির আর্টের পাশাপাশু রেডিমেড ফার্নিচার ও কাঁচের দোকান দিয়েছি। হাতে লেখা তেমন কোন কাজ নেই। জীবনের তাগিদে কাজ না ছেড়ে ধরে রেখেছি। অনেক রং তুলির শিল্পী কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে গেছে। রঙ তুলির কাজ একেবারেই নেই। প্রযুক্তির যুগে আমরা হারিয়ে গেছি। রং তুলি এখন বিলুপ্তির পথে।

আঁখি

×