
মার্কিন কবি, অনুবাদক ও সম্পাদক রবার্ট ব্লাই (২৩ ডিসেম্বর ১৯২৬-২১ নভেম্বর ২০২১) এর বাবা ও মা নরওয়ে থেকে এসে বসত শুরু করেন মিনেসোটায়। গানার একেলফ, পাবলো নেরুদার লেখা তাকে অনুপ্রাণিত করে। কবিতার পাশাপাশি তিনি সারা জীবন অনুবাদ করেছেন। নরওয়ে, সুইডিশ, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষা থেকে অনুবাদ করেছেন কবিতা, নাটক ও গদ্য। তিনি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন যেখানে বিদেশী কবিদের অনুবাদ কবিতা ছাপা হতো। তার অনুবাদের মাধ্যমে সিজার ভ্যালেজো, পাবলো নেরুদা এবং টমাস ট্রান্সট্রোমারের মতো কবিদের কথা জানতে পারে মার্কিন পাঠক। Silence in the Snowy Field তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯৬২ তে। তার কবিতার সংকলন চল্লিশের ওপর।
হার্ভাডে পড়ার সময় তিনি সঙ্গ পেয়েছিলেন ডোনাল্ড হল, এড্রিয়েন রিচ, জন অ্যাশবেরী ও কেনেথ কোচের সাথে যারা সবাই কবি হয়ে নাম করেছেন। তবে ১৯৫০ এর শেষের দিকে তিনি সেই সময়ের মূলধারার কবিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, যা তার কাছে আবেদনহীন বলে মনে হয়েছিলো। তিনি কবিদের নতুন প্রজন্মকে এই পরাবাস্তববাদ সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন এই বলে যে এগুলো এক লাইন থেকে অন্য লাইনে ব্যাঙের মতো লাফানো কবিতা। ১৯৬৬ সালে কবি ব্লাই মার্কিন লেখকদের সংগঠিত করেছিলেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে। ১৯৬৮ সালে ন্যাশনাল বুক এওয়ার্ড থেকে পাওয়া অর্থ যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দান করেন।
আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী কবি রবার্ট ব্লাই পুরুষত্ব সম্পর্কে ধারণা একটা ধারণা পোষণ করতেন। তিনি ভাবতেন শিল্পবিপ্লব পুরুষদের কেড়ে নিয়েছে পরিবার থেকে। ফলে একজন বাবা তার সন্তানকে সে ভাবে সময় দিতে পারে না যেমন দিতো সভ্যতার আদিম যুগে। যদিও বিতর্ক ছিল তার এই পুরুষ আন্দোলন নিয়ে।
কবিতা নিরাময়ের চাবিকাঠি হতে পারে যেমন ব্যক্তিগত জীবনে তেমনি সমাজের জন্য। কবি ব্লাই এটা শুধু বিশ্বাস করতেন না, প্রমাণও করেছেন তিনি।
কুকুর ও মানব জীবন
কখনোই আমি এ এরকম জীবন চাইনি, বিশ্বাস করো
বলতে পারো কাকতালীয় ভাবে ঘটে গেছে।
তুমি জানো কুকুরেরা খামারে কি ভাবে এসে হাজির হয়,
লেজ নাড়ে, ব্যাখ্যা করতে পারে না কিছু।
ভালো হয় যদি জীবনটাকে মেনে নিতে পারো দেখবে
জীবনের সাথে মানিয়ে নেবার কোশেশের সাথে
তোমার মুখের আদলটাই কেমন বদলে গেছে।
এমনকি তোমার ম-বাবাও দেখে বিশ্বাস করতে পারবে না কতটা বদলে গেছো তুমি।
তুমি ভাবছো তোমার জীবনটা দেখতে হবে অবিকল
শোবার ঘরের আয়নার সামনে দাঁড়ানো যখন তোমার বয়স ছিল দশ বছর।
সেটা ছিল স্বচ্ছ একটা নদী, ছুঁয়ে গিয়েছিলো পাহাড়ের বাতাস।
শীতের চড়ুই পাখিদের পিছু ধাওয়া করে ধরার সময়
পালকগুলো ফেলে হাত ফসকে যেতো পরম উৎসাহে
ফিরে এসে দেখেছিলে ঝরা পালক পড়ে আছে ঝোপের ভেতর।
শিক্ষকরা তোমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবে,
কিন্তু আগের মতো বালক হয়ে ফিরে যেতে পারবে না শীতের চড়ুই পাখির কাছে।
জীবনটা হলো কুকুরের প্রতিরূপ।
সে ক্ষুধা পেটে হেঁটে এসেছে দীর্ঘ পথ,
বিশেষ ভাবে পছন্দ করে না তোমাকে সে, পরিত্যাগ করে দূরে চলে যায়,
আবার ফিরে এসে সামনে দাঁড়ায়।
প্যানেল