ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দা ভিঞ্চির চিত্রেই ছিল গোপন সুড়ঙ্গের ইঙ্গিত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০১, ৩১ মে ২০২৫

দা ভিঞ্চির চিত্রেই ছিল গোপন সুড়ঙ্গের ইঙ্গিত

ছবি: সংগৃহীত

চিত্রশিল্পে গোপন রহস্য লুকিয়ে রাখার এক বিস্ময়কর উদাহরণ রেখে গেছেন কিংবদন্তি শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। ইতালির মিলান শহরের বিখ্যাত স্কোর্ফা দুর্গ (Sforza Castle) নিয়ে আঁকা তাঁর এক চিত্রকর্মে যে সুড়ঙ্গপথগুলোর উল্লেখ ছিল, সেগুলো এতদিন ধরে কল্পনার বিষয় হিসেবেই ধরে নেওয়া হতো। কিন্তু নতুন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে—সেই সুড়ঙ্গগুলো বাস্তবেই ছিল এবং এখন সেগুলোর অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা।

স্কোর্ফা দুর্গের নিচে থাকা এই সুড়ঙ্গপথের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অব মিলান, কোডেভিনটেক এবং স্কোর্ফা ক্যাসেলের গবেষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ১৪০০ শতকের শেষ দিকে নির্মিত এই দুর্গের নিচে সুড়ঙ্গপথগুলো তৈরি করা হয়েছিল মূলত সামরিক প্রয়োজন এবং সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে।

গবেষকরা আরও জানান, এই সুড়ঙ্গপথ স্কোর্ফা দুর্গকে মিলানের আরেক বিখ্যাত স্থাপনা—‘বেসিলিকা অব সান্তা মারিয়া দেল্লে গ্রাসিয়ে’—এর সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল। এটি ছিল স্কোর্ফা পরিবারের পারিবারিক সমাধিক্ষেত্র এবং এখানে চিত্রশিল্প ‘দ্য লাস্ট সাপার’ স্থাপিত রয়েছে। রাজপরিবারের সদস্যরা এই গোপন পথ ব্যবহার করেই সমাধিস্থল পরিদর্শন করতেন।

দা ভিঞ্চি স্কোর্ফা দুর্গের একজন নিযুক্ত চিত্রশিল্পী ছিলেন ১৪৯৪ সালে, যখন লুডোভিকো স্কোর্ফা দুর্গের সম্প্রসারণ করেন। সে সময় দুর্গের গঠন ও পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন দা ভিঞ্চি এবং সেখানকার অনেক গোপন দিক তাঁর চিত্রে উঠে আসে। গবেষকরা গ্রাউন্ড-পেনিট্রেটিং রাডার ও লেজার স্ক্যানিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ বহু ফুট গভীরে এই সুড়ঙ্গগুলো শনাক্ত করতে সক্ষম হন।

পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির গবেষক ফ্রানচেস্কা বিয়োলো বলেন, “গ্রাউন্ড-পেনিট্রেটিং রাডার আমাদেরকে এমন কিছু স্থান সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে যা পূর্বে জানা থাকলেও প্রবেশযোগ্য ছিল না। এতে আরও গবেষণার জন্য নতুন গোপন পথ উন্মোচিত হয়েছে।”

গবেষকরা এখন চান, প্রাচীন স্কোর্ফা দুর্গকে পূর্ণাঙ্গভাবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তির মাধ্যমে পুনর্নির্মাণ করতে, যাতে দর্শনার্থীরা সেসব গোপন অংশ ঘুরে দেখতে পারেন যা বাস্তবে এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত নয়।

বর্তমানে স্কোর্ফা দুর্গে তিনটি জাদুঘর রয়েছে। সেই ঐতিহাসিক স্থাপনায় নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হলে দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করছেন গবেষকরা।

মুমু

×