
-
সাঁঝের মায়ায় হাত বাড়ালেই তোমার শরীর; চোখ মেললেই ডাকছে আমায়-‘আয় কাছে আয়’।
অতীত স্মৃতির অস্থিরতায় বুকের ভেতর জাগছে কাঁপন এ কোন প্রলয়, কেমন বাঁধন?
অষ্টপ্রহর চোখের তারায় ভয়গুলো সব লুকিয়ে বেড়ায়; ঢেউ খেলে যায়- সর্বনাশের নষ্ট ছায়ায়।
কোন সে অসুখ সাঁঝের বেলায় আমাকে তাড়ায় বৈরী হাওয়ায়।
** উল্টো স্রোতে...
মিঠুল মাসুদ
ভেতর থেকে পুড়ছে নদী রোদের এলো জ্বর
উল্টো স্রোতে ছুটছে পুঁটি ছেড়ে আপন ঘর
চিলের ডানায় ঘুঘু বসে বাঘের ডেরায়- চর
কাকের ডিমে ফুটছে শালিক, বিনা মেঘে ঝড়!
ভীষণ খরায় উদাস দুপুর মাটির বুকে রোদ
রঙিন জলে হাঁসের সাঁতার; হারায় বিবেক বোধ।
শিমুল ডালে ফুটছে গোলাপ আপন ঘরে পর
ব্যাঙে ডাকে শীতের রাতে বাড়ছে লাশের কর
ডোমের চোখে নাঙ্গা শরীর নেইকো গলায় স্বর
জ্বলছে জ্বলুক, ডুবছে ডুবুক সারা জীবন ভর।
** না দেখা
মারুফা সুলতানা খান হীরামনি
তোমার নাম লেখা একটা হাত দেখালে,
আমার হৃদয়ে লেখা নামটি দেখতে পাও নি?
তোমার জন্য কয়েকটি কড়ি দিয়ে কেনা একটা পার্ফিউম দেখালে, আমার হৃদয়ের কস্তুরি মাখা সুগন্ধি পাও নি?
অপ্রেমের থালায় দায়িত্ব মাখানো ভাত দেখালে,
প্রেমমাখা হাতে লোকমার স্বাদ মনে রাখো নি?
সবুজ মেহেদির নিচে কুন্তলের শক্ত গোড়া দেখালে,
পাতার ভিতর রক্তাক্ত কান্না দেখতে পাও নি?
সিলিং এ ঝুলানো রঙিন ঝাড়বাতিটা দেখালে,
ঝাড়বাতির বুক থেকে ঝরতে থাকা আগুন দেখো নি?
মহাশূন্যের হাজার তারার চিৎকার শুনালে
মর্ত্যরে মায়া জড়ানো শীৎকার শুনতে পাও নি?
সবুজ গিলাফে মোড়ানো সুসজ্জিত মাজার দেখালে
অনন্ত চাওয়ার দিগন্ত জুড়ানো মাঠ দেখতে পাও নি?
** স্মৃতি রোমন্থন
মোহামেদ সাইফুল হাসান রাকিব
তোমার অসুস্থতায় এই অন্তর সদ্য জলশূন্য পুকুরের পুটির মতো ছটফট করে, এক নজর দেখতে
না পাওয়ার তৃষ্ণাসাওমরত ইফতারের পূর্ব মুহূর্তকেও হার মানায়, ঝড়ে দিশেহারা দলছুট একটি
কাক ঘুরপাক হয় একই বৃত্তে, ধানের অঙ্কুরোদের মতো দু’চোখে জেগে ওঠে স্মৃতি রোমন্থন
অভিলাষ
জহুরুল ইসলাম
আগুনের ঠোঁটে মুখ রেখে পাখি,
গন্ধ মাখে সে তনু দেহে।
কী খোঁজে?
কী তার হৃদয়ের স্বাদ!
উত্তাল তরঙ্গের মতো ছুটে আসে,
বসে থাকে দিনভর।
কতো কথা,
কতো প্রাণের চাহিদা মিটায় নীরবে।
আরো কতো ব্যথা সয়ে যায় অকাতরে।
গোধুলির মতো মুখে,
সুখ খুঁজে ফিরে আসে ঘরে।