
ছবিঃ সংগৃহীত
ফুসফুসের ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ যা প্রায়শই অনেক দেরিতে ধরা পড়ে। প্রাথমিক উপসর্গগুলো এতটাই সূক্ষ্ম ও অস্পষ্ট যে অনেকেই তা সাধারণ ঠান্ডা, বয়সজনিত সমস্যা বা জীবনযাত্রার প্রভাব বলে ভেবে উপেক্ষা করেন। অথচ এই উপসর্গগুলো শুরুতেই চিনে নিতে পারলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। নিচে ফুসফুসের ক্যান্সারের এমন ছয়টি প্রাথমিক লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যা অবহেলা না করাই ভালো:
১. দীর্ঘস্থায়ী কাশি
যদি আপনার কাশি দুই থেকে তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, বিশেষ করে আপনি ধূমপায়ী হন বা দূষণের সংস্পর্শে থাকেন, তাহলে তা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এমন কাশি ধীরে ধীরে তীব্র হতে পারে, এমনকি তা শুকনো বা থেমে থেমে হলেও এটি ফুসফুসের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
২. শ্বাসকষ্ট
অনেকেই বয়স বা শরীরচর্চার অভাবের কারণে হাঁপিয়ে ওঠাকে স্বাভাবিক ভাবেন। তবে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে বা বিশ্রামে থাকাকালীনও যদি নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তবে এটি ফুসফুসে টিউমার বা তরল জমার ইঙ্গিত হতে পারে – যা ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে।
৩. ক্রমাগত বুকের ব্যথা
বুকে, কাঁধে বা পিঠে টানা ব্যথা অনেকেই অন্য কারণে ভাবেন। কিন্তু যদি এই ব্যথা কাশি, হাসি বা গভীর শ্বাসের সময় বাড়ে এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে, তাহলে সেটি ফুসফুসে টিউমারের চাপের কারণে হতে পারে।
৪. অকারণে ওজন কমে যাওয়া
আপনি চেষ্টাও না করে যদি হঠাৎ ওজন হারিয়ে ফেলেন, বিশেষ করে ক্ষুধা কমে গেলে, তবে তা চিন্তার বিষয়। ক্যান্সার কোষ শরীরের শক্তি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করে এবং পুষ্টির ব্যবহারে বিঘ্ন ঘটায়, ফলে ওজন কমতে থাকে।
৫. কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন বা কর্কশতা
যদি আপনার কণ্ঠ দীর্ঘ সময় ধরে কর্কশ বা রুক্ষ শোনায় এবং তা কয়েক সপ্তাহে ভাল না হয়, তবে তা গলার স্নায়ুতে টিউমারের চাপের লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই এটি সাধারণ গলা ব্যথা বা কণ্ঠচাপা মনে করে ভুল করেন।
৬. ঘন ঘন শ্বাসনালী সংক্রমণ
বারবার ঠান্ডা লাগা, ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া হওয়া – বিশেষ করে যদি একই ফুসফুসে তা পুনরায় ঘটে – তবে এটি উদ্বেগের বিষয়। একটি টিউমার শ্বাসনালীর রাস্তাকে আটকে দিয়ে সংক্রমণ বাড়াতে পারে।
করণীয়
উল্লেখিত উপসর্গগুলোর অনেকগুলোই সাধারণ রোগের সাথেও মিলে যেতে পারে। তবে যদি এগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় বা দিনে দিনে খারাপের দিকে যায় – বিশেষ করে যদি আপনি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন বা ফুসফুসে পূর্বের কোনো সমস্যা থাকে – তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রাথমিক অবস্থায় ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা, শরীরের পরিবর্তনের প্রতি সচেতনতা, এবং ধূমপান বন্ধ করাই এই 'নীরব ঘাতকের' বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা।
সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া
নোভা