ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আর্থিক সফলতার ৩টি চাবিকাঠি, যেভাবে বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাড়বে আপনার সঞ্চয়

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৫:৩০, ১০ জুন ২০২৫

আর্থিক সফলতার ৩টি চাবিকাঠি, যেভাবে বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাড়বে আপনার সঞ্চয়

ছবিঃ সংগৃহীত

আর্থিক পরিকল্পনা বা বিনিয়োগ কৌশল তৈরির সময় বেশিরভাগ মানুষ ভুল জায়গা থেকে শুরু করে। তারা নানা পদ্ধতি চেষ্টা করে, একদম তাড়াতাড়ি ফলাফল না পেয়ে হতাশ হয়ে আরেকটি কৌশলে চলে যায়। এভাবে বারবার বদলাতে থাকলে কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনা।

কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা অবশ্যই ভালো, কিন্তু সফলতার একমাত্র সঠিক উপায় বলে কিছু নেই। কারণ প্রত্যেকের আর্থিক লক্ষ্য, পরিস্থিতি ও সক্ষমতা আলাদা।

আমি একজন আর্থিক পরামর্শদাতা হিসেবে ১৮ বছর ধরে দেখেছি, অনেক সময় মানুষ তিনটি কারণে তাদের আর্থিক পরিকল্পনায় সফল হয় না:

১. পরিকল্পনার কাজগুলো নিয়মিত করে না, মাঝে মাঝে শুধু কাজ করে
২. অনেক কিছু একসাথে করার চেষ্টা করে, ফলে কোনো কিছু ভালো হয় না
৩. পুরো প্রক্রিয়াটির প্রতি তাদের মনোবল ঢেলে দেওয়া হয় না

এই কারণগুলোয় অনেকেই মূল কাজগুলো এড়িয়ে চলে, ভুলগুলো ঠিক করে না, আর অবশেষে আর্থিক অবস্থা অগোছালো হয়ে যায়। পরে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করতে গিয়ে আবার একই ভুলের চক্র শুরু হয়।

কোন কৌশল বেছে নেবেন, তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যে কৌশলটি আপনি দীর্ঘমেয়াদে ধৈর্যসহকারে এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে চালিয়ে যেতে পারবেন, সেটিই আপনার জন্য সঠিক।

আর্থিক পরিকল্পনার সফলতার জন্য তিনটি প্রধান বিষয় অপরিহার্য:

১. ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
আপনি যদি নিয়মিত সঞ্চয় করেন, বিনিয়োগ চালিয়ে যান এবং আপনার সম্পদ সুরক্ষিত রাখেন, তাহলে আপনার আর্থিক ভবিষ্যত গড়ে উঠবে। একবার ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা কিছু করা যথেষ্ট নয়, সেটি নিয়মিত, প্রতিদিন, প্রতিমাসে করতেই হবে।

সঠিক বিনিয়োগে থাকা অর্থ কম্পাউন্ডিং (বু্যাজ বৃদ্ধি) থেকে সুবিধা পায়। তাই বাজারের ওঠানামা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে টাকা বারবার উঠানামা করা ঠিক নয়।

২. দীর্ঘমেয়াদে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা
বাজারে বিনিয়োগ করেই আপনি ধনী হতে পারেন, কিন্তু এজন্য প্রয়োজন ধৈর্য। ২০-৩০ বছর সময় দিলেই ছোট পোর্টফোলিও বড় হতে পারে। আপনি যদি এই সময় ধরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন, তাহলে ফলাফল চমৎকার হবে।

৩. নিজের পরিকল্পনা নিয়ে আত্মবিশ্বাস রাখা
আপনি যদি নিজের কৌশল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী না থাকেন, তাহলে ধারাবাহিক থাকা এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। নিজের আর্থিক লক্ষ্য ও পরিস্থিতি বুঝে এমন পরিকল্পনা বেছে নিন, যেটা আপনার পক্ষে সহজে পালনযোগ্য এবং আপনার বিশ্বাসের যোগ্য।

সুতরাং, নিখুঁত কোনো পরিকল্পনা খুঁজে পাওয়ার চেয়ে নিজের জন্য এমন একটি পরিকল্পনা বেছে নিন, যেটা আপনি নিয়মিত ও দীর্ঘমেয়াদে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চালিয়ে যেতে পারবেন।

জেনে নিন আপনার সীমাবদ্ধতা, নিজের শক্তিকে কাজে লাগান, দুর্বলতার জন্য পরিকল্পনা করুন, এবং এমন কিছু থেকে বিরত থাকুন যা আপনি চালিয়ে যেতে পারবেন না। সফলতা আসবে যদি আপনি ধৈর্য, প্রতিশ্রুতি এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে আপনার পরিকল্পনায় এগিয়ে যান।

মারিয়া

×