ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পড়তে বসেই ঘুম চলে আসে? ঘুম ঝাড়িয়ে মনোযোগ বাড়াতে অনুসরণ করুন এই ১০টি কার্যকর কৌশল

প্রকাশিত: ১০:০৩, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৪, ১১ জুন ২০২৫

পড়তে বসেই ঘুম চলে আসে? ঘুম ঝাড়িয়ে মনোযোগ বাড়াতে অনুসরণ করুন এই ১০টি কার্যকর কৌশল

পড়ার সময় ঘুম চলে আসা অনেক শিক্ষার্থীরই পরিচিত সমস্যা। বই খুললেই চোখ বুজে আসে, মনোযোগ হারিয়ে যায় পড়ার বিষয়বস্তু থেকে। দীর্ঘ সময় একটানা পড়াশোনা কিংবা অপ্রয়োজনীয় ক্লান্তি এই সমস্যার মূল কারণ হতে পারে। তবে কিছু সহজ ও বিজ্ঞানসম্মত অভ্যাস গড়ে তুললে এই সমস্যা এড়ানো যায় সহজেই।

নিয়মিত ঘুম, হাইড্রেশন, সক্রিয় অধ্যয়ন কৌশল এবং পড়ার পরিবেশে সামান্য পরিবর্তন এনে আপনি নিজেকে পড়ার সময় সতেজ ও মনোযোগী রাখতে পারেন। নিচে এমনই ১০টি কার্যকর টিপস তুলে ধরা হলো, যা অনুসরণ করলে ঘুমের ঢুলুনি ছাড়াই আপনি পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখতে পারবেন দীর্ঘ সময়।

১. ঘুমকে দিন অগ্রাধিকার
আপনার মস্তিষ্ক যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পায়, তাহলে অধ্যয়নকালে জেগে থাকা কঠিন হবে। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা গুণগত মানের ঘুম নিশ্চিত করুন। গভীর ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুম শরীর ও মনকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে, যা আপনাকে পড়াশোনায় সচল রাখতে সাহায্য করে।

২. পানি পান করুন নিয়মিত
ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করতে পারেন। সারা দিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে আপনি কেবল সতেজ থাকবেন না, আপনার মনোযোগও বাড়বে।

৩. বিছানায় বসে নয়, পড়ুন নির্দিষ্ট জায়গায়
বিছানায় বসে পড়াশোনা করার সময় শরীর বিশ্রামের সংকেত পায়, ফলে ঘুম চলে আসে দ্রুত। একটি সুনির্দিষ্ট ডেস্ক বা চেয়ার ব্যবহার করুন, যেখানে আপনার মন ও দেহ দুটোই কাজের জন্য প্রস্তুত থাকবে।

৪. উজ্জ্বল আলো ব্যবহার করুন
অন্ধকার বা ঝাপসা আলো ঘুম বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই পড়ার সময় উজ্জ্বল আলোয় নিজেকে রাখুন। এতে মস্তিষ্ক সচল থাকে, চোখে চাপ কম পড়ে এবং ঘুম ভাব দূরে থাকে।

৫. পড়ার সময় সক্রিয় থাকুন
শুধু চোখ বুলিয়ে পড়া নয়, বরং জোরে পড়ে শোনা, হাতে লিখে নেওয়া, নোট তৈরি করা বা অন্য কাউকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করলে আপনার মনোযোগ অনেক বেশি থাকবে। এতে শুধু ঘুম কাটবে না, বরং বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদে মনে থাকবে।

৬. বিরতি নিন নিয়মিত
৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পরপর অল্প সময়ের বিরতি নিন। এতে মন সতেজ হয়, ক্লান্তি দূর হয় এবং মস্তিষ্ক নতুন তথ্য গ্রহণে আরও দক্ষ হয়।

৭. গ্রুপ স্টাডির সহায়তা নিন
একাকী পড়তে পড়তে একঘেয়েমি আসতে পারে, যা ঘুমের অন্যতম কারণ। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিলিতভাবে পড়লে আলোচনা হয়, মতবিনিময় হয় এতে মনোযোগ বাড়ে এবং ঘুম আসার সম্ভাবনা কমে যায়।

৮. হালকা সুরের সঙ্গীতে থাকুন উদ্দীপ্ত
উদ্দীপক মিউজিক বা রিদমিক ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক পড়ার সময় আপনাকে সজাগ রাখতে পারে। তবে এমন গান বেছে নিন, যা আপনাকে বিঘ্ন না ঘটিয়ে মনোযোগে সহায়তা করে।

৯. প্রয়োজনে নিন পাওয়ার ন্যাপ
অত্যন্ত ক্লান্ত বোধ করলে ১০-২০ মিনিটের ছোট্ট ঘুম বা পাওয়ার ন্যাপ নিন। এতে শরীর ও মন আবার নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হয় এবং আপনাকে সতেজভাবে পড়ায় ফেরত আনে।

১০. মাঝেমধ্যে নড়াচড়া করুন
লম্বা সময় বসে থাকলে শরীর ও রক্ত সঞ্চালনে স্থবিরতা আসে, যা ক্লান্তি বাড়ায়। তাই মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাহাঁটি করুন, স্ট্রেচিং করুন এতে শরীরে প্রাণ ফিরে আসবে এবং ঘুম দূর হবে।

পড়ার সময় ঘুমের সমস্যা মানেই আপনি অলস নন, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য ঠিক রাখার সংকেত এটি। তাই শরীর ও মনের চাহিদার প্রতি যত্নশীল হোন। ওপরের পরামর্শগুলোকে অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে আপনি শুধু ঘুম কাটিয়েই নয়, বরং আরও কার্যকর ও ফলপ্রসূভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবেন।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/4zh986v6

আফরোজা

×