
ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও যারা সন্তান ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের জন্য ইনট্রাউটেরাইন ইনসেমিনেশন (IUI) এক কার্যকর প্রজনন চিকিৎসা পদ্ধতি। এই চিকিৎসায় বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত শুক্রাণু সরাসরি জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়, যাতে নিষিক্তকরণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
চিকিৎসা শুরুর আগে একজন বিশেষজ্ঞ রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস ও পরিবার পরিকল্পনার লক্ষ্য যাচাই করেন। ‘ফ্যালোপিয়ান টিউব খোলা আছে কিনা, জরায়ুর গঠন স্বাভাবিক কি না এবং শুক্রাণুর গুণমান কেমন, এসব নিরীক্ষার জন্য পরীক্ষা নির্ধারণ করা হয়,’ বললেন ডা. শ্রুতি এন মানে, পরামর্শক ও আইভিএফ বিশেষজ্ঞ, মাদারহুড ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ, খারগার।
এরপর, নারীর মাসিক চক্রের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন থেকে ওভুলেশন ইন্ডাকশনের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। ‘ডাক্তার পর্যায়ক্রমে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে ডিম্বাণুর পরিপক্বতা পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রয়োজনে রক্তপরীক্ষা করান। ডিম্বাণু পরিপক্ব হলে চূড়ান্ত আইইউআই তারিখ নির্ধারণ করা হয়,’ ব্যাখ্যা করেন ডা. মানে।
একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে গাইনোকোলজিস্ট ডা. মৈত্রেয়ী আঠাভালে বলেন, আইইউআই-এর দিনে—যেটি সাধারণত একদিন বিরতির পর হয়—সঙ্গীর শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। এরপর ল্যাবের এমব্রায়োলজিস্ট মাইক্রোস্কোপের নিচে ভালো মানের শুক্রাণু নির্বাচন করেন। ডিফিউশন গ্র্যাডিয়েন্ট বা সুইম-আপ পদ্ধতিতে এসব শুক্রাণুর গুণমান ও গতি বাড়ানো হয়। এরপর সবচেয়ে সক্রিয় শুক্রাণু নিয়ে তৈরি করা হয় ছোট একটি নমুনা। এই নমুনা কাস্কো স্পেকুলামের মাধ্যমে জরায়ুর মধ্যে একটি সূক্ষ্ম টিউব দিয়ে ডিম্বাণুর কাছে প্রবেশ করানো হয়।
এই প্রক্রিয়ায় সঙ্গী বা দাতার শুক্রাণু স্পার্ম ওয়াশের মাধ্যমে ল্যাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে শুধুমাত্র সক্রিয় ও গুণগতমানসম্পন্ন শুক্রাণু পাওয়া যায়। এরপর শুরু হয় আইইউআই, যা একটি ব্যথাহীন ও কয়েক মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়া প্রক্রিয়া। এটি প্যাপ স্মিয়ারের মতো সহজ এবং প্রক্রিয়া শেষে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করা যায়। ইনসেমিনেশনের দুই সপ্তাহ পর গর্ভধারণ হয়েছে কিনা তা জানতে একটি প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়, বলেন ডা. মানে।
শহীদ