
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কারাবন্দি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান বড় ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি নিজেই নিজেকে নিজেকে দলের ‘প্যাট্রন-ইন-চিফ’ বা প্রধান অভিভাবক ঘোষণা করেছেন।
মঙ্গলবার আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গৌহর। তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজেই এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন – কারাগার থেকে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশনা বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আয়ুব খানের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে, ইমরান খান তার অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বার্তায় জনগণকে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এই পোস্টটি এসেছিল এমন এক সময়ে, যখন তার বোন আলিমা খান ইমরান খানের মুক্তির জন্য ‘দেয়া-নেয়ার সূত্র’ প্রস্তাব করেন। যদিও ইমরান খানের নিজে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুযোগ নেই, তবুও পিটিআই এই পোস্ট কারা পরিচালনা করছে, সে বিষয়ে কিছু বলেনি।
ব্যারিস্টার গৌহর তার পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে— এমন গুজবও নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি জানান, আসন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকবেন না খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুর। বরং বিভিন্ন ব্যক্তিকে আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে গৌহর বলেন, তিনি সবসময় সংলাপের পক্ষপাতী এবং প্রতিষ্ঠানের (স্ট্যাবলিশমেন্ট) সঙ্গে পিটিআইয়ের আলোচনা এখনো বন্ধ হয়নি।
পিটিআইয়ের রাজনৈতিক নীতিনির্ধারক রউফ হাসান জানান, ‘ফাউন্ডিং চেয়ারম্যান’ পদটি একরকম অবসৃত বা অপ্রচলিত মনে হওয়ায় ইমরান খান কার্যকর একটি পদ হিসেবে ‘প্যাট্রন-ইন-চিফ’ হতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “খান সাহেব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন, তাই তিনি এই পদ নিচ্ছেন। এতে তার নেতৃত্বের অবস্থান আরও স্পষ্ট হবে।”
তবে রউফ বলেন, এই সিদ্ধান্তের পর ইমরান খানকে বিচ্ছিন্ন রাখার প্রচেষ্টা হতে পারে এবং আরও বিধিনিষেধের মুখে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
সাবেক জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারও ইমরান খানের প্যাট্রন-ইন-চিফ হওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে তিনি দলের চেয়ারম্যান হতে পারছেন না। তাই এই পদ গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, “এটা অনেকটা রেহবার ঘোষণার মতোই, যেমন খান আবদুল ওয়ালী খান তার দলের রেহবার হয়েছিলেন। ইমরান খান নীতিনির্ধারণ ও দিকনির্দেশনা দেবেন।”
উল্লেখ্য, এর আগে নওয়াজ শরিফও তার দণ্ডের পর পিএমএল-এন দলের ‘প্যাট্রন’ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
প্রথমে ইমরান খান জুনায়েদ আকবরকে পিএসি থেকে সরে গিয়ে দলীয় দায়িত্বে মনোযোগ দিতে বললেও পরে আবার তাকে সংসদের সবচেয়ে শক্তিশালী কমিটি পিএসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে থাকার অনুমতি দেন।
এছাড়া, আগে আন্দোলনগুলোতে নেতৃত্ব দেওয়া গান্ডাপুরকে এবার সামনে না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রদেশের মন্ত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং সংবাদ সম্মেলনও চলমান।
এই প্রেক্ষাপটে, আন্দোলনের আগে ইমরান খানের নতুন পদ গ্রহণকে পিটিআইয়ের নেতৃত্ব ধরে রাখার একটি কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র - https://www.dawn.com/news/1915323/imran-declares-himself-patron-in-chief-of-pti
সানজানা