ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কর্মচারী হিসেবেই বিলিয়ন ডলারের মালিক!

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২০ মে ২০২৫

কর্মচারী হিসেবেই বিলিয়ন ডলারের মালিক!

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব কোম্পানি শুরু না করেও কিংবা ধনী পরিবারে জন্ম না নিয়েও কেউ যদি বিলিয়নিয়ার হতে পারেন, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু শীর্ষ নির্বাহী। তারা অন্যের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, মূলত শেয়ার ও পারফরম্যান্স-ভিত্তিক বেতন প্যাকেজের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন।

২০২৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন এমন রেকর্ড ৪৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন, যারা নিজেরা প্রতিষ্ঠাতা নন-অন্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চ বেতনে কাজ করে এই অবস্থানে পৌঁছেছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৯ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে, কারণ শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী এবং সিইওদের বেতন প্যাকেজ আকাশছোঁয়া।

এক্সিকিউলার নামের একটি তথ্য বিশ্লেষণ সংস্থা জানিয়েছে, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ দশ সিইওর গড় বার্ষিক বেতন ছিল ৪৬ মিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩০ মিলিয়নে। যদিও কোভিড-পরবর্তী সময়ে কিছুটা কমে ২০২৩ সালে তা হয়েছে গড়ে ১২৫ মিলিয়ন ডলার, যা এখনো অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের আয়।

এই বেতন গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখছে স্টক অপশন এবং ইক্যুইটি শেয়ার। ২০১২ সালে যেখানে সিইও বেতনের ৫৪% ছিল শেয়ারে, ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬%-এ। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই শেয়ারের মূল্যও বেড়েছে, ফলে এই নির্বাহীরা বছরের পর বছর ধরে আরো ধনী হয়ে উঠছেন।

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০৩ জন বিলিয়নিয়ারের মধ্যে মাত্র সাতজন ছিলেন এমন ভাড়াটে নির্বাহী। এখন ৯০০ বিলিয়নিয়ারের মধ্যে ৫% (৪৮ জন) এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, যা আগের বছরের ৪% থেকে বেশি।

এই বছর তালিকায় ১৮ জন নতুন মুখ যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন: সুন্দর পিচাই, আলফাবেট (গুগলের মূল কোম্পানি) সিইও, উইলিয়াম ল্যানসিং, ফিকো-এর সিইও, গুইন শটওয়েল, স্পেসএক্স-এর প্রেসিডেন্ট ও সিওও, জেবি স্ট্রাউবেল, টেসলার সাবেক প্রযুক্তি প্রধান, হার্ভি জোনস, এনভিডিয়ার দীর্ঘদিনের পরিচালক, হাওয়ার্ড লুটনিক, ক্যান্টর ফিটজগারাল্ডের প্রাক্তন সিইও ও বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী

তবে এই বছর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন লিসা সু, এএমডি-এর সিইও, কারণ গত ১২ মাসে এএমডি-এর শেয়ারের দাম প্রায় ৩০% কমে গেছে।

এছাড়া, আগের বছর তালিকায় না থাকলেও এ বছর ফিরে এসেছেন রায়ান গ্রেভস (উবারের প্রাথমিক পর্যায়ের কর্মী) এবং বব মুগলিয়া (সনওফলকে-এর প্রাক্তন সিইও)।

এই ধরণের "হায়ার্ড-হ্যান্ড" বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা বাড়ার পেছনে শুধুমাত্র বাজারের ঊর্ধ্বগতি নয়, বরং শেয়ারভিত্তিক বেতন কাঠামোর প্রভাবও বড় একটি কারণ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই প্রবণতা আরও বাড়বে, এবং বেতন ও পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিলিয়নিয়ার হওয়া নির্বাহীদের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

সূত্র: https://shorturl.at/4im5a

মিরাজ খান

×