ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নালিতাবাড়ীতে পাহাড়ি ঢল: বাড়ছে নদীর পানি, অকাল বন্যার শঙ্কা

এম. সুরুজ্জামান, নিজস্ব সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৬:৫১, ২০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৭:০২, ২০ মে ২০২৫

নালিতাবাড়ীতে পাহাড়ি ঢল: বাড়ছে নদীর পানি, অকাল বন্যার শঙ্কা

গত কয়েক দিনের টানা বজ্রবৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর ১২টায় চেল্লাখালী নদীর পানি বারোমারী বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপরে এবং ভোগাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদীর পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চেল্লাখালী নদীর বারোমারী পয়েন্টের গেজ পাঠক আলমগীর হোসেন এবং ভোগাই নদীর পৌরসভা পয়েন্টের গেজ পাঠক মুকুল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, গত ৩-৪ দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলায় এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে করে নদীগুলোর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নদী উপচে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে ঢলের পানি ভাটির দিকে সরে যাবে, ফলে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা কমে যাবে।

অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে বোরো ধান কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। মাড়াই ও শুকানোর কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছে। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে ধান কাটলেও, আবহাওয়ার কারণে অনেক জমির ধান এখনও কাটতে পারেননি। রোদ না থাকায় কাটা ধানও ঠিকভাবে শুকানো যাচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “এই উপজেলায় প্রায় ৯৬ শতাংশ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। বাকি ৪ শতাংশ ধান খারাপ আবহাওয়ার কারণে এখনও কাটা সম্ভব হয়নি। রোদ না থাকায় কৃষকেরা ধান শুকাতেও পারছেন না।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বেড়ে গেছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, শুকনো খাবার বিতরণ ও স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

নুসরাত

×