
ছবিঃ সংগৃহীত
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ২০২৫ সালের সংশোধনীতে ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার তদন্ত ও বিচার দ্রুত সম্পন্নের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ গঠন থেকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে। এই বিধান সংযোজন করা হয়েছে আইনের ধারা ২০-তে।
আগে ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা ছিল, যা এখন আদালতের বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ধারা ৩২(ক)-তে এ বিষয়ে সংশোধন আনা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন থেকে প্রতিটি মামলায় বাধ্যতামূলকভাবে ডিএনএ টেস্ট করার প্রয়োজন হবে না, আদালতের অনুমোদনসাপেক্ষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এটি পরিচালনা করবেন।
তদন্ত এবং বিচার দীর্ঘায়িত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়াও দায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আগে কেবল তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ ছিল। সংশোধিত আইনের ধারা ৩১(ক)(৪)-এ বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হলে ট্রাইব্যুনালকে সুপ্রিম কোর্ট ও সরকারকে অবহিত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পলাতক আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়, সে জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণের পরিবর্তে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা বলা হয়েছে আইনের ধারা ২১-এ।
দূরবর্তী সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণে দেরি না করতে ট্রাইব্যুনালকে ভিডিও কনফারেন্স বা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সরকার এই প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি ধারা ২৪(৪)-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
শিশু ধর্ষণ মামলার বিচারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে পৃথক শিশু অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। যদিও তা না হওয়া পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোতেই এসব মামলার বিচার চলবে। সংশ্লিষ্ট বিধান রাখা হয়েছে ধারা ২৬(ক)-তে।
সার্বিকভাবে নতুন এই সংশোধনীতে ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় দ্রুত বিচার, তদন্তে স্বচ্ছতা এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতায় আইনগত কাঠামো আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
আলীম