
ছবি: সংগৃহীত
মাত্র ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে ভয়াবহ আর্থিক ও মানবিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৫,০০০-এর বেশি নাগরিক। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যে বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ইরানের দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের আধুনিক নগরীগুলো যেন রূপ নিয়েছে হরর সিনেমার দৃশ্যে। বহু ভবন ও আবাসিক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যা এখন বসবাসের অযোগ্য। এক সরকারি হিসাব অনুযায়ী, কেবল অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণই প্রায় ১.৪৩ বিলিয়ন ডলার।
বাসগৃহ ধ্বংস হওয়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন হোটেলগুলোতে। এই অস্থায়ী আবাসনের খরচই দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ২৯ মিলিয়ন ডলার।
এই যুদ্ধের পর ইসরায়েলের সরকারি ক্ষতিপূরণ তহবিলে জমা পড়েছে ৪১,০০০-এর বেশি আবেদন। এর মধ্যে প্রায় ৩৩,০০০ আবেদন শুধুই ঘরবাড়ি ক্ষতির জন্য। আরও ৮,০০০ আবেদন এসেছে যানবাহন ও যন্ত্রাংশ ক্ষতির জন্য। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী তেল আবিব, যেখানে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন কমপক্ষে ২৬,০০০ বাসিন্দা।
ইরানের হামলার সময় দেশজুড়ে প্রায় সব বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। জরুরি সেবা ছাড়া কার্যক্রম থেমে যায় সবখানে। এতে ইসরায়েলের অর্থনীতিতে ব্যাপক লোকসান হয়েছে। শুধু সরাসরি ক্ষতি নয়, পরোক্ষভাবেও দেশটি পড়েছে দীর্ঘমেয়াদি চাপের মুখে।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষণা দিয়েছে এক *সহায়তা কর্মসূচি, যার আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে। এই কর্মসূচির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭০ থেকে ৮৬০ মিলিয়ন ডলার। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই ব্যয় ভবিষ্যতে ইসরায়েলের বাজেটে বড়সড় চাপ ফেলবে।
গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে যেখানে মাত্র ৬,০০০ ইসরায়েলি নাগরিক সহায়তা নিয়েছিলেন, এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫,০০০-এ। ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে এই সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে, যা সরকারের জন্য বড় ধরনের সামাজিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধ ইসরায়েলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়ের বোঝা তৈরি করেছে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের জীবনযাত্রা দুটোই এখন এক অনিশ্চয়তার মুখে।
ছামিয়া