হেগেতে থাকছেন ট্রাম্প, আলোচনায় রাশিয়া‑ইউক্রেন যুদ্ধ

সদম্ভে ইউরোপীয় দেশগুলো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ ৩২টি সদস্য দেশে এই সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে বার্ষিক ন্যাটো নেতা-সম্মেলন শুরু হয়েছে। চলমান রাশিয়া‑ইউক্রেন যুদ্ধ ও ওয়াশিংটনের অক্ষই কোথায় আছে—সেসব প্রশ্নের মধ্যেই এই সম্মেলনের আয়োজন।

এই সম্মেলন মঙ্গলবার শুরু হয়ে দুই দিন চলবে। এটি হবে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম ন্যাটো সম্মেলন; ন্যাটো মহাসচিব এবং প্রয়াত ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট্টে প্রথমবারের মতো সভার সভাপতিত্ব করবেন। ২৫ জুন উত্তর আটলান্টিক কাউন্সিলের বৈঠকে সবার মুখ্য অংশ, যেখানে প্রধানমন্ত্রীরা প্রতিরক্ষা বাজেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আলোচনা করবেন।

প্রত্যাশিত প্রধান উপস্থিতি:

• যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার
• কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নে
• মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
• ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাক্রো
• জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মার্চ
• ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্ডিয়া মেলোনি
• স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ
• নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ
• তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান
• হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান
• ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
• ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইয়েন অথবা ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আ আন্তোনিও কোস্তা

অন্যান্য:

আলবেনিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রিস, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লাক্সেমবুর্গ, মন্টেনেগ্রো, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া ও সুইডেন।

এই অনুষ্ঠানে ইসরায়েল–ইরান দ্বন্দ্ব নিয়েও আলোচনা হবে। এছাড়াও আরও যে বিষয়ে আলোচনা থাকবে - 

ইউক্রেনকে সমর্থন

• ২০২২ সালের রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকেই ইউক্রেনকে সমর্থনই প্রধান উপজ্জা।

• ২০২৪ সালের ওয়াশিংটন সম্মেলনে মিত্ররা ঘোষণা দিয়েছে, “ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ন্যাটোর মধ্যে।” বছরে কমপক্ষে €৫০ বিলিয়ন নিরাপত্তা সহায়তা থাকবে।

• মহাসচিব রুট্টে ১২ জুন বলেছিলেন, ইউক্রেনকে যথাসম্ভব শক্তিশালী করে তুলতে হবে যেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার স্থায়িত্ব থাকে এবং ভবিষ্যত শান্তি চুক্তিগুলো রক্ষা করতে পারে।

• যদিও ইউক্রেন এখনো ন্যাটো সদস্য না, ২০০৮ সালের ‘ওয়াশিংটন ঘোষণায়’ তাদের আগাম শর্ত পূরণ করলে সদস্য হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এটি রাশিয়ার কাছে একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।

• তবে দলে ফাটলও দেখা দিয়েছে—যেমন হাঙ্গেরি রাশিয়ার প্রতি ন্যূনতম সমর্থন ও রাজনৈতিক স্থিরতা চাইছে। পোল্যান্ড ইউক্রেনি শরণার্থী ইস্যুতে দ্বিধা প্রকাশ করেছে।

• ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, তার প্রেসিডেন্সি ইউক্রেন নিয়ে ‘প্রশ্নচিহ্ন’ সৃষ্টি করেছে; তিনি যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি তার আচরণ ছিল শীতল।

প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি

• ২০২৩ সালে সাফ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—ন্যাটো সদস্য হিসেবে দেশগুলো মোট আউটপুটের ≥২% প্রতিরক্ষা খরচ করবে, যা ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য হবে। ২২টি দেশ এই লক্ষ্য হাসিল করেছে; কিন্তু বেলজিয়াম, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, ইটালি, লাক্সেমবুর্গ, মন্টেনেগ্রো, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া ও স্পেইন এতদিন লক্ষ্য পূরণ করেনি।

• আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৫% লক্ষ্যমাত্রা দাবি করছেন—নভেম্বর পর্যন্ত বিলম্বের বিরুদ্ধে।

• বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর $৩.৫ বিলিয়ন বার্ষিক বাজেটের ~১৫.৮% বহন করছে।

• রুট্টে প্রস্তাব দিচ্ছেন—মিত্ররা ২০৩২ সালের মধ্যে ≥৫% বাজেট রাখুক, যার ~১.৫% “সফট খরচ”—ইনফ্রা ও সাইবারসিকিউরিটিতে।

• স্পেইন ইতিমধ্যে এই ফিগারকে ‘অবাস্তব’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

• রুট্টে আরও বলেন—“আমাদের শিল্প‑কারখানার গতি বাড়াতে হবে”—কারণ ইউরোপে ও কানাডায় অস্ত্র‑প্রস্তুতি ত্বরান্বিত হচ্ছে না।

• যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে—পরবর্তী মন্ত্রিসভা পর্যায়ে ২.৩% → ২.৫% (২০২৭), তারপরে ৩% (পরবর্তী সময়) করা হবে।

সূত্র - https://www.aljazeera.com/news/2025/6/24/who-is-attending-the-nato-summit-and-whats-on-the-agenda