
ছবি: সংগৃহীত
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত গড়িয়েছে নবম দিনে। প্রথমদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার আভাস মিললেও বাস্তবে সেই আশার রেখা এখন অতীত। বরং ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির হুঁশিয়ারিমূলক ঘোষণার পর সংঘাত নতুন মোড় নিয়েছে।
‘যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে’, খামেনির এমন বক্তব্যের পরপরই ইরান ইসরায়েল জুড়ে ভয়ঙ্কর পাল্টা হামলা শুরু করে। জেরুজালেম, তেল আবিবসহ ইসরায়েলের একাধিক শহরে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে জনজীবন। ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ও উত্তরাঞ্চলে জারি করা হয় বিমান সতর্কতা। এদিকে, ইসরায়েলি সরকার জানিয়েছে, তারা ‘যতদিন প্রয়োজন ততদিন’ এই অভিযান চালিয়ে যাবে এবং ‘নিজেদের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত’ পিছু হটবে না।
ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি নিয়ে হুঁশিয়ারি
এই প্রেক্ষাপটে ইরান জানিয়েছে, তাদের কাছে এমন ক্ষেপণাস্ত্র ও উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র মজুদ রয়েছে যা এখনো ব্যবহার করা হয়নি। এরপরই ইরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে উচ্চগতিসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র এতো দ্রুত ছুটে আসে যে, ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়ে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র কেবলমাত্র বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি উন্নত রাষ্ট্রের কাছেই রয়েছে।
ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলো দিনে ও রাতে—উভয় সময়ে চালানো হচ্ছে। এর ফলে ইসরাইলের পক্ষে আক্রমণের সময় নির্ধারণ করে উপযুক্ত প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এখনো ব্যবহৃত হয়নি ‘ডুমসডে’ ক্ষেপণাস্ত্র
দ্য নিউ আরবের খবরে বলা হয়েছে, ইরান এখনো ব্যবহার করেনি ‘শহীদ হাজ কাশেম’ নামক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার গতি শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। এটি সলিড ফুয়েল চালিত এবং নামকরণ করা হয়েছে কুদস ফোর্সের নিহত কমান্ডার কাশেম সোলাইমানীর নামে।
তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে ‘খোররামশাহ’ ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো ‘ডুমসডে অস্ত্র’ বলে আখ্যা দিচ্ছে। এটি ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত, যার ওয়ারহেড বহনের ক্ষমতা ১ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানলে একাধিক ভবনের ব্লক ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
হাজারো ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ
এছাড়া ইরানের হাতে এখনো কাদর, এমাদসহ হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ রয়েছে, যা এখনো ব্যবহার করা হয়নি। পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই সংঘাতে যুদ্ধের পরিসর কতটা বিস্তৃত হবে—তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে গোটা বিশ্বেই।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=kvtQk3QT1JQ
রাকিব