
ছবি: সংগৃহীত
তেহরান ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে, তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালানোর জন্য ইরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য পর্যালোচনার ভিত্তিতে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান এরইমধ্যে ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত রেখেছে।
মার্কিন সেনাবাহিনী ইউরোপে প্রায় তিন ডজন বিমান মোতায়েন করেছে, যেগুলো যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমানগুলোর সহায়তায় ব্যবহৃত হবে। বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্ভাব্য আক্রমণের সময় এই বিমানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায়। এতে ওয়াশিংটনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে, বড় ধরনের যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যদি ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তবে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা রেড সিতে হামলা শুরু করবে। পাশাপাশি ইরাক ও সিরিয়ার ইরানপন্থি মিলিশিয়ারা যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালাতে পারে।
আরও কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলার শিকার হয়, তবে তারা হরমুজ প্রণালিতে মাইন পুঁতে পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোর চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। বাহরাইন, কাতার, আমিরাত, জর্ডান ও সৌদি আরবের ঘাঁটিগুলোতে সেনাদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
ইরানের দুই কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, ইসরায়েলের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে তারা ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রথম হামলা চালাবে। এরপর হামলা চালানো হবে অন্যান্য আরব দেশের ঘাঁটিতেও, যদি সেগুলো ইসরায়েলকে সহায়তা করে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে কেউ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। আমাদের জনগণের ওপর তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।” তিনি ইউরোপের বিভিন্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে তার দায়ভার ইসরায়েল ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের নিতে হবে।
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রঘাঁটিগুলো এমন জায়গায় অবস্থিত, যেখান থেকে বাহরাইন, কাতার ও আমিরাতের মার্কিন ঘাঁটিতে খুব সহজেই হামলা চালানো সম্ভব। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যেই আশঙ্কা বেড়েছে যে, খুব শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রও এই সংঘাতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে।
এম.কে.