ছবি: সংগৃহীত
প্রতিদিন এক কাপ কফি পান—এ শুধু সকাল বেলার চনমনে করার উপায় নয়, বরং হতে পারে দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠিও। যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিয়মিত কফি পান করলে মৃত্যুঝুঁকি কমে যায়। তবে শর্ত আছে—এই কফিতে যেন অতিরিক্ত চিনি বা ক্রিম না মেশানো হয়।
গেরাল্ড জে. ও ডোরোথি আর. ফ্রিডম্যান স্কুল অব নিউট্রিশন সায়েন্স অ্যান্ড পলিসির গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬,০০০ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের ২০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ করে কফি পান করার ধরন এবং মৃত্যুর কারণ, এই দুই বিষয়ের উপর গবেষণা চালানো হয়েছে।
যারা দিনে ১-২ কাপ সাধারণ (ক্যাফেইনযুক্ত) কফি পান করতেন, তাদের মৃত্যুঝুঁকি ছিল ১৪% কম। আর যদি সেই কফিতে চিনি বা চর্বির পরিমাণ খুব কম হয়, তখন উপকার আরও বেশি। এক কাপ কফিতে যদি চিনি ২.৫ গ্রামের কম হয় এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট ১ গ্রামের নিচে থাকে (যেমন এক টেবিল চামচ হাফ-অ্যান্ড-হাফ ক্রিম), তাহলে তা মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
যেসব মানুষ বেশি চিনি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত করে কফি পান করেন, তাদের জন্য এই সুফল মিলছে না। বরং তা হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, অতিরিক্ত ফ্লেভারড সিরাপ বা ক্রিম মিশ্রিত কফি রীতিমতো একটি ডেজার্টের মতো হয়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, কফি পান হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস করে। তবে ক্যানসার সংক্রান্ত মৃত্যুর সঙ্গে কফির কোনও সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। দিনে ১ কাপ কফি পান করলে মৃত্যুঝুঁকি কমে ১৬%, আর ২-৩ কাপ পান করলে এই হার হয় ১৭%। কিন্তু তিন কাপের বেশি কফি পান করলে উপকার বাড়ে না।
এটি একটি পর্যবেক্ষণভিত্তিক (observational) গবেষণা হওয়ায় এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন: অংশগ্রহণকারীদের খাবার সংক্রান্ত তথ্য নিজেরাই জানিয়েছে, যা স্মৃতিভ্রষ্টতা বা ভুলের কারণে ভিন্ন হতে পারে।
ডিক্যাফ কফির ক্ষেত্রে গবেষণা তেমন স্পষ্ট কিছু বলছে না। কারণ, খুব কম মানুষই নিয়মিত ডিক্যাফ পান করেন—ফলে এই তথ্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
আপনি যদি প্রতিদিন এক বা দুই কাপ কালো কফি খান, অথবা খুব সামান্য চিনি বা দুধ দিয়ে পান করেন, তাহলে তা আপনার শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে অতিরিক্ত ফ্লেভার, ক্রিমার বা চিনির কফি পানের অভ্যাস থাকলে, এখনই ভাবার সময়।
মুমু ২
