ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

রাগ হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ৫টি কার্যকর উপায়

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ১৮ জুন ২০২৫

রাগ হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ৫টি কার্যকর উপায়

ছবি: সংগৃহীত।

রাগ এক ধরনের স্বাভাবিক আবেগ। তবে এই রাগ যদি নিয়ন্ত্রণহীন হয়, তাহলে তা ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্র এমনকি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, নিয়মিত রাগপ্রবণ মানুষদের মধ্যে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও উদ্বেগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ শেখা আজকের দিনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাগ কখনো পুরোপুরি দূর করা যায় না, তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে তা সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। সবচেয়ে জরুরি হলো, রাগের সময় নিজেকে চিনতে পারা ও প্রতিক্রিয়া না দেখানো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাগ হলে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়:

১. চুপ থাকুন ও ১০-এ গুনুন: রাগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ১০ পর্যন্ত ধীরে গুনুন। এতে মস্তিষ্ক সামান্য সময় পায় পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে। কেউ চাইলে ২০ পর্যন্তও গুনতে পারেন।

২. স্থান ত্যাগ করুন: রাগের সময় আলোচনার বদলে পরিবেশ থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলুন। কিছু সময় একা থাকুন। পানি পান করুন কিংবা হেঁটে আসুন—এসবেই মানসিক অবস্থা অনেকটা স্থির হয়ে যায়।

৩. গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন: একটি নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে ৪ সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিয়ে, ৪ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ৪ সেকেন্ড ধরে ছাড়ুন। এই ধরণের গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম স্নায়ুকে শান্ত করে।

৪. নিজেকে প্রশ্ন করুন: রাগটা কি সঠিক কারণে? নিজের আবেগ ও কারণ বিশ্লেষণ করুন। রাগের উৎস যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়, তবে তা স্বীকার করে নেওয়াই শ্রেয়। আবার যদি যৌক্তিক কারণ হয়, তখনও হঠকারিতার বদলে ঠাণ্ডা মাথায় সমাধান খুঁজে বের করুন।

৫. রাগ প্রকাশের বিকল্প উপায় বেছে নিন: রাগ চেপে রাখা নয়, বরং তা প্রকাশের সঠিক উপায় বেছে নেওয়া উচিত। জার্নাল লেখা, আঁকা, গান শোনা, শরীরচর্চা কিংবা কাউন্সেলিং নেওয়া—এসব মাধ্যমে আবেগের ভার হালকা করা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাগ নিয়ন্ত্রণ মানে দুর্বলতা নয়, বরং আত্মনিয়ন্ত্রণের পরিচায়ক। যারা রাগ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম, তাদের ব্যক্তিত্ব আরও শক্তিশালী হয় এবং সামাজিক সম্পর্কও স্থায়ী হয়।

দ্রষ্টব্য: যদি রাগের কারণে আপনি প্রায়ই নিজের বা অন্যের ক্ষতি করেন, তাহলে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

মিরাজ খান

×