
ছবি: সংগৃহীত।
আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবনে অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। ক্যারিয়ার, সম্পর্ক, শিক্ষাপথ কিংবা দৈনন্দিন ছোটখাটো বিষয়েও অনেকে দ্বিধায় পড়ে যান—ঠিক কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধুই মানসিক দুর্বলতা নয়, বরং এক ধরনের মানসিক চাপ ও তথ্য বিভ্রান্তির ফলাফল।
মনোরোগ চিকিৎসকদের মতে, সিদ্ধান্তহীনতা বা ইনডিসিশন সাধারণত ঘটে অতিরিক্ত চিন্তা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, ব্যর্থতার ভয় ও অতীত অভিজ্ঞতার নেতিবাচক প্রভাবের কারণে। অনেক সময় চারপাশের চাপ বা অন্যের মতামতকেও অন্ধভাবে গুরুত্ব দেওয়ায় মানুষ নিজের চাওয়া-না-চাওয়ার দিকটি স্পষ্ট করতে পারে না। যারা ‘পারফেকশনিস্ট’ মানসিকতার হন, তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ তারা সবকিছু নিখুঁতভাবে করতে চান, ফলে ভুল করার ভয় তাদের থামিয়ে দেয়।
কনফিউশন কাটিয়ে ওঠার ৫টি উপায়:
১. নিজেকে প্রশ্ন করুন:
কোন সিদ্ধান্তটা আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? আপনার মূল লক্ষ্য কী? ৫ বছর পর এই সিদ্ধান্তটা কতটা প্রভাব ফেলবে—এমন প্রশ্নগুলো নিজের ভেতরে করুন।
২. ছোট করে শুরু করুন:
বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ছোট ছোট পদক্ষেপে আগান। এতে করে ঝুঁকি কমবে এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনার সুযোগ পাওয়া যাবে।
৩. আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন:
নিজের বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার ওপর বিশ্বাস রাখুন। ভুল হলে শিখবেন, তাই সিদ্ধান্তে দেরি না করে এগিয়ে যান।
৪. বেশি মতামত নয়, যথাযথ মতামত নিন:
সবাই কী বলছে তা না শুনে, যাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও বিচারবোধ আছে, তাদের কাছ থেকে মত নিন।
৫. মানসিক চাপ কমান:
ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা সময়মতো বিশ্রাম আপনার মনকে শান্ত করবে। শান্ত মনে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল কম হয়।
যদি সিদ্ধান্তহীনতা আপনাকে প্রতিদিনের কাজকর্মে ব্যাহত করে, হতাশা বা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে দ্রুত একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। তবে ভুল সিদ্ধান্তের ভয় যেন কখনো আপনাকে স্থবির না করে। ভুলও শেখার একটি অংশ—এই উপলব্ধিই হতে পারে কনফিউশন কাটিয়ে ওঠার প্রথম ধাপ।
দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সচেতনতামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি। কোনো মানসিক জটিলতা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মিরাজ খান