ইরানের সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়ও প্রতিরোধের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। যেন ঘরে বাইরে সর্বত্রই দখলদার বাহিনীর পতনের ঘণ্টা বাজছে। ইরানের মিসাইল হামলার ভয়াবহতায় বিপর্যস্ত নেতানিয়াহুর বাহিনী এবার গাজাতেও প্রাণ হারাতে শুরু করেছে। সর্বশেষ সোমবার গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় আরও দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় চলমান অভিযানে ইসরায়েলের মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৩২ জনে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সোমবারের ঘটনায় নিহত দুই সেনার মধ্যে একজন হলেন গোলানি ব্রিগেডের ১২তম ব্যাটালিয়নের স্টাফ সার্জেন্ট দাভিদ লেশেন। তিনি সাঝাও জান এলাকা দিয়ে অভিযানে অংশ নিতে গিয়ে গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিস্ফোরণের শিকার হন। ওই হামলায় আরও চার সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে একই দিন খান ইউনিস শহরে একটি ভবনে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে নিহত হন তাল বোভ শফিস নামে একজন ক্যাপ্টেন। তিনি ছিলেন ৭২৬৬ কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কোম্পানি কমান্ডার।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এসব প্রাণহানির ঘটনা গোপন রাখতে চাইলেও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা তা প্রকাশ করে। চলমান সংঘর্ষে গত তিন দিনে এ নিয়ে তিনজন ইসরায়েলি সেনা প্রাণ হারালেন।
এদিকে গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অভিযোগও বেড়েছে। রবিবার মানবিক সহায়তা সরবরাহকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৩৪ জন গাজাবাসী নিহত হন বলে দাবি করেছে স্থানীয় সূত্র।
যুদ্ধের চাপ সামলাতে গাজা থেকে সেনা সরিয়ে জর্ডান ও মিশর সীমান্তে মোতায়েন করা হচ্ছে। তবুও গাজায় চারটি আইডিএফ ডিভিশন এখনও তৎপর। এরমধ্যে ৯৮তম ডিভিশনকে খান ইউনিস থেকে সরিয়ে জর্ডানের সীমান্তে নেওয়া হয়েছে। নতুন করে গঠিত ৯৬তম গিলআদ ডিভিশন মোতায়েন করা হয়েছে জর্ডানের উত্তর সীমান্তে এবং ৮০তম এডম ডিভিশন অবস্থান করছে মিশর ও জর্ডান সীমান্তে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে নিজেদের সর্বশক্তি নিয়োগ করায় গাজায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছেছে। ফলে একযোগে হামলায় পড়ে ইসরায়েলের দখল নীতির ভীত নড়ে গেছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করছে এই দ্বিমুখী যুদ্ধে মানবিক বিপর্যয় ও বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কায়।
মিমিয়া
