ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

ট্রাম্প ও মিলারকে ‘ঘৃণার প্রতিমূর্তি’ বলে চাকরিচ্যুত হয়েও নিজের কথায় অনড় এবিসি নিউজের সাংবাদিক

প্রকাশিত: ০০:১১, ১৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:১১, ১৮ জুন ২০২৫

ট্রাম্প ও মিলারকে ‘ঘৃণার প্রতিমূর্তি’ বলে চাকরিচ্যুত হয়েও নিজের কথায় অনড় এবিসি নিউজের সাংবাদিক

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ থেকে সম্প্রতি চাকরিচ্যুত হওয়া জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক টেরি মোরান জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে মন্তব্য করেছিলেন, তা একেবারে সত্য বলে তার মনে হয়েছিল।

এক সাক্ষাৎকারে টেরি মোরান বলেন, ‘এই মন্তব্য আমার হৃদয় ও মস্তিষ্কের গভীর থেকেই এসেছিল। আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছি।’

সাম্প্রতিক এক পডকাস্টে মোরান বলেন, ৮ জুন রাত ১২টার পর তিনি এক্স (আগে টুইটার)-এ একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লেখেন—‘স্টিফেন মিলার ঘৃণার দিক থেকে বিশ্বমানের। তিনি ট্রাম্পবাদের মস্তিষ্ক। ঘৃণাই তার আত্মিক পুষ্টি।’

তিনি আরও লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একজন ‘বিশ্বমানের’ ঘৃণাকারী। তবে তার ঘৃণা কেবল নিজের মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার।”

পরে যদিও মোরান পোস্টটি মুছে ফেলেন, ততক্ষণে এবিসি নিউজ কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। ‘অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ও পক্ষপাতদুষ্ট আক্রমণের’ অভিযোগে তদন্তের ঘোষণা দেয় তারা। এরপর জানানো হয়, তার চাকরির মেয়াদ আর নবায়ন করা হবে না—কার্যত চাকরিচ্যুতি।

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় স্টিফেন মিলার বলেন, ‘এটাই প্রমাণ করে, কর্পোরেট প্রেস কেমনভাবে গণমাধ্যমের মুখোশ পরে চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি ছড়ায়। টেরি মোরান এবার নিজের মুখোশ খুলে ফেলেছেন।’

তবে মোরান দাবি করেন, তিনি একজন ‘গর্বিত মধ্যপন্থী’ এবং রাজনীতিতে বিদ্বেষ আর অসহিষ্ণুতার বিপক্ষে।

পডকাস্টের উপস্থাপক টিম মিলার তাকে প্রশ্ন করেন, পোস্টটি লেখার সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন কি না। জবাবে মোরান বলেন, “একদম পারিবারিক এক শান্ত সন্ধ্যা ছিল, আমি শুধু আমার সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে সেই পোস্ট লিখি। লেখা শেষে মনে হয়েছে, ‘এটা তো সত্য’। তাই পোস্ট করে দিই।”

১৯৯৭ সাল থেকে এবিসি নিউজে কর্মরত মোরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পপন্থী কয়েকজন মুখপাত্রও তীব্র সমালোচনা করেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট পোস্টটিকে ‘অসম্মানজনক এবং বিকৃতমনা’ বলে আখ্যা দেন। সিনেটর জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘এটি একটি জঘন্য অপবাদ।’

প্রসঙ্গত, ছয় মাস আগেই এবিসি নিউজ ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা একটি মানহানির মামলায় তার একটি প্রেসিডেন্সিয়াল ফাউন্ডেশনকে ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়। সেই মামলায় সঞ্চালক জর্জ স্টেফানোপোলাস ভুলভাবে বলেছিলেন, ট্রাম্প ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন—যদিও প্রকৃতপক্ষে আদালত ট্রাম্পকে যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

এখন মোরান স্বাধীন সাংবাদিক হিসেবে সাবস্ট্যাকে কাজ করছেন এবং ওহাইও অঙ্গরাজ্যের স্প্রিংফিল্ডে বসবাসরত হাইতিয়ান অভিবাসীদের নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

টেরি মোরান বলেন, ‘ট্রাম্প নির্বাচনের আগে মিথ্যা দাবি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন যে হাইতিয়ানরা গৃহপালিত প্রাণী খাচ্ছে। এরপর থেকেই সেই অভিবাসীরা রাজনৈতিকভাবে অপবাদ কুড়াচ্ছে।’

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

রাকিব

×