
ছবি: সংগৃহীত
সুইজার আল্পসের বরফাবৃত পাহাড় থেকে হিমবাহ ও পাথরের বিশাল ধস নেমে একটি আলপাইন গ্রামের ৯০ শতাংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। বুধবারের (২৮ মে) এই ভয়াবহ ঘটনার পর নিখোঁজ ৬৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির খোঁজে শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযান বৃহস্পতিবার (২৯ মে) অনিরাপদ পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ভ্যালাইস ক্যান্টনের পুলিশ জানায়, হিমবাহ ধসের ফলে ছড়িয়ে পড়া ধুলার ঘন মেঘ ও কাদায় পুরো গ্রাম ঢাকা পড়ে যায়। স্থানীয় প্রশাসনের স্টেট কাউন্সিলর স্টেফান গাঞ্জার সুইস জাতীয় টেলিভিশনকে জানান, ‘পুরো গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।’
বলা হচ্ছে, গ্রামের উপরের বার্চ হিমবাহের এক বিশাল খণ্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে ধসে পড়ে। এর ফলে আশপাশের এলাকা ও লনজা নদীর খাত মাটির নিচে চাপা পড়ে, ফলে নদীর পানি আটকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দক্ষিণ ল্যাচেন্টাল উপত্যকার ব্লাটেন গ্রামের বাড়িঘর ও স্থাপনাগুলো কাদার স্রোতে আংশিকভাবে চাপা পড়ে আছে।
বিপর্যয়ের আগের কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩০০ বাসিন্দা ও সব গবাদিপশুকে সরিয়ে নিয়েছিল, কারণ ১৫ লাখ ঘনমিটার বরফধারণক্ষম হিমবাহটিকে বিপজ্জনকভাবে দুর্বল মনে হচ্ছিল।
সুইস প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার সুটার শুক্রবার (৩০ মে) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানানো হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের হিমবিজ্ঞানীরা গত কয়েক বছর ধরেই বরফগলার হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশটির হিমবাহ দ্রুত গলতে শুরু করেছে। ২০২৩ সালে দেশটি তার মোট হিমবাহের ৪ শতাংশ হারিয়েছে, যা ছিল এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। এর আগের বছর ২০২২ সালে হিমবাহ গলার হার ছিল ৬ শতাংশ।
সুইজারল্যান্ড ইউরোপের মধ্যে সর্বাধিক হিমবাহের দেশ, এবং বর্তমানে জলবায়ু সংকট সেখানে প্রকৃতির ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট করে তুলছে।
সূত্র: এপি।
রাকিব