
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের অশান্ত আকাশে আবারো জমছে কালো মেঘ। ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কেন্দ্রে এবার উঠে এসেছে এক নতুন আতঙ্ক—ইরানের অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল 'এতেমাদ'। বিশ্লেষকদের মতে, এটি হতে পারে আসন্ন ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’-এর প্রধান হাতিয়ার।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ইরান প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরাইলের বিরুদ্ধে চালায় 'অপারেশন ট্রু প্রমিস'। শত শত ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার মাধ্যমে ইসরাইলকে চমকে দেয় তারা। যদিও ইসরাইল সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়, তবে ইরান স্পষ্ট করে দেয়—তারা এখন আর পরোক্ষ নয়, সরাসরি সংঘাতে প্রস্তুত।
সেই প্রস্তুতিরই নতুন রূপ হতে পারে 'ট্রু প্রমিস থ্রি', যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে 'এতেমাদ'। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে উন্মোচিত এই ক্ষেপণাস্ত্র ১৬ মিটার লম্বা ও ১.২৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট। এর পাল্লা প্রায় ১,৭০০ কিলোমিটার—যা ইরান থেকে ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম।
তবে শুধু দূরত্ব নয়, এতেমাদের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো এর গাইডেড ওয়ারহেড। এটি প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ইরানের ইসলামিক রেভুলুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) জানিয়েছে, "ট্রু প্রমিস থ্রি হবে এমন এক প্রতিশোধ যা ইসরাইলের অস্তিত্বের মেরুদণ্ড কাঁপিয়ে দেবে। এবার আঘাত আসবে তাদের হৃদয়ে।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতেমাদের মোতায়েন ইরানের যুদ্ধপ্রস্তুতিরই ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে ইরান শুধু ইসরাইল নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—"আমরা নীরব দর্শক নই।"
ইসরাইল ইতিমধ্যে এ হুমকিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আইডিএফ সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনে দ্রুততম সময়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালাতে প্রস্তুত। তবে এর মাঝে যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটতে চাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সতর্ক করে দিয়েছেন—ইসরাইল যেন এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয় যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, যদি ইসরাইল আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, ইরান 'ট্রু প্রমিস থ্রি' শুরু করবে এবং এতেমাদ হবে সেই ঝড়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্র। আর এই যুদ্ধ শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং তা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার আগুন ছড়িয়ে দিতে পারে।
আসিফ