ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজায় ত্রাণ সরবরাহের নামে লাখ লাখ ডলার কামিয়েছে জর্ডান

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ১৫ মে ২০২৫

গাজায় ত্রাণ সরবরাহের নামে লাখ লাখ ডলার কামিয়েছে জর্ডান

ছবি :সংগৃহীত

ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য পৌঁছাতে গিয়ে জর্ডান সরকার বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে । বিমান থেকে খাদ্য সরবরাহের সময় প্রতি অবতরণে ৪ লাখ ডলার পর্যন্ত ফি নিয়েছে আম্মান।

গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে আন্তর্জাতিক ত্রাণ পৌঁছানোর প্রক্রিয়া থেকে জর্ডানের কর্তৃপক্ষের এই বিপুল অর্থ উপার্জনের তথ্য উঠে এসেছে মিডল ইস্ট আই নামক সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জর্ডান হাশেমাইট চ্যারিটি অর্গানাইজেশন (JHCO) নামক একটি সরকারি সংস্থা গাজায় ত্রাণ পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। এই সংস্থা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে শুধুমাত্র তারাই জর্ডান হয়ে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে।

পুরো গাজা যখন মানবিক সংকটে বিপর্যস্ত, তখন অঞ্চলটিতে সাহায্যের নামে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে জর্ডান।

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এবং JHCO-র কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, JHCO-র নামে যে সব সাহায্য পাঠানো হচ্ছে, তার বড় অংশই আসলে বিদেশি সরকার ও এনজিও থেকে এসেছে। জর্ডানের সরাসরি অবদান ছিল খুবই সামান্য।

দুই এনজিও সূত্র এবং স্কিম সম্পর্কে অবগত আরও দুই ব্যক্তি জানিয়েছেন, গাজায় প্রবেশ করা প্রতিটি ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য জর্ডান প্রায় ২,২০০ ডলার ফি নিয়েছে, যা সরাসরি জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে জমা দিতে হয়েছে।

এছাড়া গাজায় প্রতি বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার জন্য জর্ডান ২ থেকে ৪ লাখ ডলার পর্যন্ত চার্জ করেছে বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো। যেখানে একেকটি বিমানে থাকা ত্রাণ একটি ট্রাকের অর্ধেকেরও কম পরিমাণ ছিল।

MEE-র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ত্রাণ কার্যক্রম থেকে আয় বাড়ার ফলে জর্ডান তাদের লজিস্টিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ করছে। এক বিদেশি অনুদানে ২০০টি নতুন ট্রাক কেনা হয়েছে, এবং জাতিসংঘের সহায়তায় বড় আকারের গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে।

এই বিষয়ে জর্ডান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী ও JHCO তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পরপরই জর্ডানজুড়ে হামাস ও গাজার পক্ষে বিক্ষোভ শুরু হয়। এসব চাপের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধ শুরুর এক মাস পর জর্ডান সামরিকভাবে গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা শুরু করে।এখন পর্যন্ত দেশটি প্রায় ৪০০টি এয়ারড্রপ পরিচালনা করেছে, যার অনেকগুলো অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তবে গাজা বাসিন্দা ও মানবিক কর্মীরা এই ত্রাণ কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এয়ারড্রপ ঝুঁকিপূর্ণ, অপ্রতুল এবং অপ্রয়োজনীয়। এর তুলনায় স্থলপথে ত্রাণ পাঠানো অনেক বেশি কার্যকর।

জর্ডান দাবি করেছে, যুদ্ধ শুরু পর থেকে তারা স্থলপথে অন্তত ১৪০টি ত্রাণবহর পাঠিয়েছে, যার প্রতিটিতে ছিল একাধিক ট্রাক। এসব পাঠানোর জন্যও ইসরায়েলের অনুমতি ও সমন্বয় লাগতো।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধের আগে গাজায় প্রতিদিন ৫০০ ট্রাক ত্রাণের প্রয়োজন ছিল, যা যুদ্ধ শুরুর পর কখনোই পূরণ হয়নি।

 

সূত্র - Jordan profited up to $400,000 per Gaza aid airdrop

সা/ই

×