
ছবি :সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ানে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে তিনজন কট্টরপন্থী সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। সেনাবাহিনীর দাবি, ওই এলাকায় আরও এক সন্ত্রাসীর উপস্থিতি রয়েছে। সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি এখনও থমথমে।
সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা নির্মূল করতে জম্মু-কাশ্মিরে ‘অপরেশন কিলার’ নামের এ সেনা অভিযান পরিচালনা করছে ভারত।
প্রথমে কুলগাম জেলায় অভিযান শুরু হলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে শোপিয়ানের শোয়েকাল কেলার এলাকার একটি ঘন বনাঞ্চলে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিট, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল অভিযান শুরু করে। প্রায় দুই ঘণ্টার বন্দুকযুদ্ধে তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ এক পোস্টে জানায়, অভিযানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিরাপত্তা বাহিনীও চরম প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং তাদের "ধ্বংস" করা হয়। অভিযানের সময় এলাকা ঘিরে রাখা হয় এবং সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ভারতের "অপারেশন সিন্দুর" নামক সামরিক প্রতিক্রিয়া দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পহেলগামে নিরীহ ২৬ জন নাগরিককে হত্যার দায়ে পাকিস্তানঘেঁষা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভারত সরাসরি বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। এতে বহু সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস হয় বলে ভারতীয় সামরিক সূত্র জানায়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, "অপারেশন সিন্দুর ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে একটি নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। এখন থেকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলাকে যুদ্ধের শামিল হিসেবে গণ্য করা হবে, এবং তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল বরদাস্ত করবে না। যে দেশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপারেশন সিন্দুরে বিশ্ব দেখেছে পাকিস্তানের আসল চেহারা। পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা নিহত সন্ত্রাসীদের জানাজায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রীয় মদতের প্রমাণ দিয়েছে।"
৭ মে, ভারতের বিমান বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে নির্ভুলভাবে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানে। তবে পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারী গোলাবর্ষণ ও ড্রোন হামলা চালানো হয়, যাতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অধিকাংশ হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হলেও কয়েকটি স্থানে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পরে, ১০ মে দুই দেশ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সীমান্তে তৎপর রয়েছে এবং যেকোনো নতুন উসকানিতে তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
সা/ই