
ছবিঃ সংগৃহীত
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে গিয়ে এখন নিজেরাই চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে ভারত। সরাসরি যুদ্ধ না করেও শুধু আকাশসীমা বন্ধ রেখে পাকিস্তান ভারতের বিমান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারতের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থায়ী হয়, তবে এয়ার ইন্ডিয়ার একারই ক্ষতি হবে প্রায় ৭,২৬০ কোটি রুপি বা ৫৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পেলগাম ঘটনার পর টানাপোড়েনের শুরু
কাশ্মীরের পেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের বিমান চলাচলের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ভারতও পাকিস্তানের বিমানের জন্য একই সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি ভারতের এভিয়েশন খাতে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়া
টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিকল্প পথ ব্যবহার করায় তাদের ফ্লাইট সময় ও দূরত্ব—উভয়ই বেড়ে গেছে, ফলে খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ। এয়ার ইন্ডিয়া জানায়, তাদের দীর্ঘপথের ফ্লাইটগুলোতে এখন অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হচ্ছে, ক্রুর সংখ্যা বাড়াতে হচ্ছে, এবং কর্মীদের বিশ্রাম দেওয়ার জন্য সময়ও দ্বিগুণ হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি থেকে শিকাগোগামী ফ্লাইট আগে সরাসরি পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে ১২,৫০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ১৪ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটে পৌঁছাতো। এখন সেই একই ফ্লাইটকে প্রায় ১৫,০০০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে, এবং সময় লাগছে ১৯ ঘণ্টারও বেশি। সান ফ্রান্সিস্কো থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইটে আগে সময় লাগতো ১৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিট, এখন সেটি ছাড়িয়ে গেছে ২০ ঘণ্টা।
আঞ্চলিক ফ্লাইটেও প্রভাব
শুধু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নয়, আঞ্চলিক ফ্লাইটেও পড়েছে বড় প্রভাব। দিল্লি থেকে তাশখন্দগামী ইন্ডিগোর ফ্লাইট আগে পৌঁছাতো মাত্র ২ ঘণ্টা ১৮ মিনিটে। এখন সেটি ইরান ও তুর্কমেনিস্তান ঘুরে যেতে গিয়ে সময় নিচ্ছে প্রায় ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন
এই বিপুল ক্ষতির কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। যদিও দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি, তবে সংস্থাটি জানায় যে, যাত্রী ভোগান্তি কমাতে এবং ক্রুদের চাপ কমাতে তারা নিয়মিত বৈঠক করছে।
ইমরান