ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

এবার ইসরায়েলের অস্তিত্ব থাকবে না, ৪১ বছর পর মুক্তি পেলেন জর্জ ইব্রাহিম

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ২৭ জুলাই ২০২৫

এবার ইসরায়েলের অস্তিত্ব থাকবে না, ৪১ বছর পর মুক্তি পেলেন জর্জ ইব্রাহিম

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ৪১ বছরের বন্দিজীবন শেষে অবশেষে মুক্তি পেলেন লেবাননের আলোচিত ফিলিস্তিনপন্থী বিপ্লবী যোদ্ধা জর্জ ইব্রাহিম আব্দুল্লাহ। ফ্রান্সের কারাগারে প্রায় চার দশক কাটানোর পর শুক্রবার (১৯ জুলাই) তিনি নিজ দেশ লেবাননে ফিরে আসেন।

মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার
১৯৮৪ সালে ফ্রান্সের লিওন শহর থেকে আটক হন জর্জ ইব্রাহিম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি প্যারিসে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা চার্লস রবার্ট রে এবং ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়াকুফ বার্সিমান্টোফ–কে হত্যায় জড়িত ছিলেন। ফরাসি পুলিশ সেই অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে দণ্ডিত করে।

ফ্রান্স ছাড়ার শর্তে মুক্তি
মুক্তির ক্ষেত্রে একটি শর্ত ছিল—জীবদ্দশায় তিনি আর কখনো ফ্রান্সে পা রাখতে পারবেন না। এই শর্তেই ফ্রান্সের লেনমেজো কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বৈরুতে আবেগঘন ফিরে আসা
মুক্তির পর তিনি পৌঁছান বৈরুতের রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যেখানে তাঁকে বরণ করে নিতে জড়ো হন শত শত অনুসারী ও সাধারণ মানুষ। পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এই প্রবীণ বিপ্লবী। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “শত্রুদের প্রতিহত করতে আমরা জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করেই যাব। ইসরায়েলের অস্তিত্ব খুব শিগগিরই বিলীন হবে—তারা শেষ অধ্যায়ে পা দিয়েছে।”

বিপ্লবী থেকে বন্দীজীবনের গল্প
১৯৫১ সালে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় কোবায়াত শহরে এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেন জর্জ ইব্রাহিম আব্দুল্লাহ। উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান ফ্রান্সে এবং টুলুস বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানেই পরিচয় ঘটে বামপন্থী ও বিপ্লবী রাজনৈতিক চিন্তাধারার সঙ্গে।

১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি লেবাননে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং যোগ দেন পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন–জেনারেল কমান্ড (PFLP-GC)–এ। তিনি উপনিবেশবাদবিরোধী ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা আন্দোলনে একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন এবং সেই আদর্শ থেকেই সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন।

ভক্ত-অনুসারীদের উচ্ছ্বাস
চার দশকেরও বেশি সময় পর প্রিয় নেতাকে কাছে পেয়ে আবেগ ছুঁয়ে যায় হাজারো মানুষের চোখে। বিমানবন্দরে তাঁকে ঘিরে ধরে একাত্মতার স্লোগান ও ভালোবাসার উচ্ছ্বাস। ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফায়া পরিহিত জর্জ ইব্রাহিম আব্দুল্লাহ নতুন করে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে ওঠেন মুক্ত লেবাননের মাটিতে।

শেখ ফরিদ 

×