ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনেই নিহত ৭০

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১১ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনেই নিহত ৭০

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো তীব্র হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, একাধিক নারী ও শিশু, এবং চিকিৎসা সহায়তায় নিয়োজিত কর্মীরাও।

গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত নেতজারিম করিডোর এর কাছে একটি বিতরণ কেন্দ্রে খাদ্য সহায়তার জন্য জড়ো হওয়া মানুষের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। সেখানে অন্তত ২০ জন নিহত হন, আহত হন ২০০ জনের বেশি। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়েছে—মোহাম্মদ খালিল আল-আথামনেহ।

এই বিতরণ কেন্দ্রটি পরিচালনা করছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)—যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত বিতর্কিত একটি মানবিক সংস্থা। গত ২৭ মে থেকে এ সংস্থা বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় দেড় হাজার আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছে গাজা প্রশাসন।

এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস বলেছে, GHF এখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে এক ভয়াবহ অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে, যারা ত্রাণের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। এটি এক ধরনের লুকানো মৃত্যুকূপ।

আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজজুম দেইর আল বালাহ থেকে জানান, এসব বিতরণ কেন্দ্র এখন বারবার রক্তপাতের মঞ্চে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ইসরায়েলি ড্রোন, স্নাইপার ও ট্যাংক দিয়ে চারপাশ থেকে আক্রমণ চালানো হয়—একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক কৌশলের মাধ্যমে হামলা চলছে।

জাতিসংঘ ইতোমধ্যে গাজার পরিস্থিতিকে ‘পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সহায়তার অভাবে শিশুদের মৃত্যুর খবরও প্রতিদিনই আসছে। তার মধ্যেই সহায়তা কেন্দ্রে উপস্থিত মানুষজনকে লক্ষ্য করে বারবার গুলি চালানোর ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ইসরায়েল সরকার এ পর্যন্ত এই হামলাগুলোর দায় স্বীকার করেনি এবং এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের নিরস্ত্র জনতার ওপর বারবার হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

বিবৃতি অনুযায়ী, এই মানবিক সহায়তার কেন্দ্রগুলো এখন ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আশ্রয় নয়, বরং মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই পরিস্থিতি দ্রুত অবসানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

ফরিদ 

×