ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এবার ট্রাম্পকে নিষ্ঠুর, বর্ণবাদী ও আমেরিকান মূল্যবোধবিরোধী বলল হাউস ডেমোক্র্যাটরা

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:৪৫, ৫ জুন ২০২৫

এবার ট্রাম্পকে নিষ্ঠুর, বর্ণবাদী ও আমেরিকান মূল্যবোধবিরোধী বলল হাউস ডেমোক্র্যাটরা

ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন, ব্যাপক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির পর বুধবার হাউস ডেমোক্র্যাটরা তা কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন। তারা এটিকে “বৈষম্যমূলক”, “বিপজ্জনক” এবং “নিষ্ঠুর, বর্ণবাদী ও আমেরিকান মূল্যবোধবিরোধী” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞায় স্বাক্ষর করেন, যা ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এটি তার প্রথম মেয়াদের বিতর্কিত নীতির পুনরাবৃত্তি, যা সে সময় ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ ও ‘ইসলামবিদ্বেষী’ বলে সমালোচিত হয়েছিল।

নিষেধাজ্ঞায় আফগানিস্তান, বার্মা, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়া বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ওপরও ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

ট্রাম্প এই পদক্ষেপকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি’ বলে দাবি করলেও, কলোরাডোর বোল্ডারে সাম্প্রতিক এক ঘৃণাজনিত হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন। তবে হামলার সন্দেহভাজন ব্যক্তি মিশরীয় নাগরিক হলেও, মিশরের নাম নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই।

ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ডন বেয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে ট্রাম্পের পক্ষপাত ও বিদ্বেষের ব্যবহার আমাদের নিরাপদ করে না, বরং আমাদের বিভক্ত করে এবং বৈশ্বিক নেতৃত্ব দুর্বল করে।” তিনি আরও বলেন, এই নীতি পরিবার বিচ্ছিন্নতার কারণ হবে।

নতুন প্রস্তাবটি ট্রাম্পের আগের নিষেধাজ্ঞার সম্প্রসারণ, যেখানে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞাটি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং পরে একটি পরিবর্তিত সংস্করণ চালু করা হয়, যেটি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাতিল করেছিলেন।

অ্যারিজোনার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ইয়াসামিন আনসারি বলেন, “আমরা আগেও এই বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখেছি।”

ওয়াশিংটনের প্রতিনিধি প্রমিলা জয়পালও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা বহু মানুষের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে—বিশেষ করে যারা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীকে সহায়তা করায় তালেবানদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে কিংবা যারা সুদানের গৃহযুদ্ধ থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, “যেসব মানুষ আফগানিস্তান, কঙ্গো, হাইতি ও সুদানের মতো বিপজ্জনক দেশ থেকে পালিয়ে আসছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বৈশ্বিক নিরাপত্তা আরও অস্থিতিশীল করবে।”

আগের নিষেধাজ্ঞার মতোই, ট্রাম্পের এই নতুন নিষেধাজ্ঞাটিও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, যা হয়তো প্রশাসনের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত বা বিলম্বিত করবে।

আবির

×